গতকালই মার্কিন অভিবাসন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য বড় ঘোষণা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই১বি ভিসার ফি বৃদ্ধি করেছিলেন তিনি। এরপর গোটা দিন মার্কিন নিবাসী ভারতীয়দের দুশ্চিন্তায় কেটেছে। এদিকে আমেরিকায় কাজ করা অনাবাসী যে ভারতীয়রা দেশে ছুটি কাটাতে এসেছেন, তাদেরও শীঘ্রই আমেরিকা ফিরে যেতে নির্দেশ দিয়েছিল সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি। তবে গতকাল ভারতীয় সময় গভীর রাতে হোয়াইট হাউস স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এইচ১বি ভিসার জন্য নতুন ঘোষিত ১ লাখ মার্কিন ডলার ফি কেবল নতুন আবেদনকারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে। বর্তমান ভিসাধারীদের এই ফি দিতে হবে না। এদিকে এটি বার্ষিক ফি নয়, এককালীন ফি হিসেবে দিতে হবে। পরবর্তী ভিসা লটারি সাইকেল থেকে এই ফি কার্যকর হবে।
বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিকের সাথে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প শুক্রবারই এইচ১বি ভিসার জন্য একটি নতুন ফি চালুর ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন। উচ্চ-দক্ষতার চাকরির জন্য মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলি এই এইচ১বি ভিসার মাধ্যমে বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ করে থাকেন আমেরিকায়। তবে বিদেশি কর্মীদের সংখ্যা কমিয়ে মার্কিনিদের চাকরি সুনিশ্চিত করতে এইচ১বি ভিসার ফি বৃদ্ধির পথে হাঁটেন ট্রাম্প। উল্লেখ্য, এইচ১বি ভিসার মাধ্যমে সবথেকে বেশি সংখ্যায় ভারতীয়রাই যান আমেরিকায়। এদিকে আমেরিকায় বহু সংস্থায় বর্তমানে কয়েক লাখ ভারতীয় এইচ১বি ভিসায় কর্মরত আছেন। এই আবহে ট্রাম্পের এই নির্দেশিকা স্বাক্ষরে অনিশ্চয়তার কালো মেঘ ঘনীভূত হয়।
পরে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, 'যারা ইতোমধ্যে এইচ১বি ভিসাধারী এবং বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন তাদের পুনরায় প্রবেশের জন্য ১ লাখ ডলার চার্জ করা হবে না। এই ফি রবিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে কার্যকর হবে এবং এক বছরের জন্য কার্যকর হবে। তবে সরকার যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে এটি জাতীয় স্বার্থে প্রযোজ্য হবে, তবে এর মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে।' পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এক পৃথক ব্যাখ্যায় হোয়াইট হাউস বলেছে যে এই নিয়মটি 'বর্তমান ভিসাধারীদের প্রভাবিত করবে না।'
তবে অভিবাসন আইনজীবীরা বলেছেন যে হোয়াইট হাউসের এই পদক্ষেপ অনেক দক্ষ কর্মীর মাথায় হাত বসাবে। এবং আমেরিকান ব্যবসার ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে এই নিয়ম। এদিকে এইচ১বি ভিসার ফি বৃদ্ধির কী প্রভাব ভারতীয়দের ওপর পড়বে, সেটা বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। এদিকে ন্যাসকমের ভাইস-প্রেসিডেন্ট শিবেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, প্রতি বছরে যে সংখ্যক এইচ-১বি ভিসা প্রদান করা হয়, তার ৭০ শতাংশের বেশিই পান ভারতীয়রা। ন্যাসকমের মতে, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ভারতীয় প্রযুক্তি পরিষেবার পাশাপাশি আমেরিকার উপরেও বড়সড় প্রভাব পড়বে।