নদিয়ার রানাঘাট জেলায় এক বছর ধরে পলাতক থাকা শিশু যৌন নির্যাতনের অভিযুক্তকে অবশেষে ধরতে সমুদ্রে নামতে হল পুলিশকে। শুক্রবার গভীর রাতে কাকদ্বীপ-নামখানার মাঝসমুদ্রে মৎস্যজীবীর ছদ্মবেশে পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাকড়াও করে অভিযুক্তকে। দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের হাত ফসকে যাওয়া ওই ব্যক্তিকে ধরতেই এই অভিনব কৌশল নেয় তদন্তকারী দল।
আরও পড়ুন: ভরদুপুরে বাউল শিল্পীকে মুখ চেপে ধর্ষণ কলকাতায়, অভিযুক্তকে পাকড়াও করল পুলিশ
ঘটনার সূত্রপাত ২০২৪ সালের অক্টোবরে। হরিণঘাটা থানায় এক নাবালিকা নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের হয়। টানা অনুসন্ধানের পর চলতি বছরের জুলাইয়ে কল্যাণী থেকে উদ্ধার করা হয় কিশোরীটিকে। চিকিৎসা পরীক্ষায় জানা যায়, সে অন্তঃসত্ত্বা। তদন্তে উঠে আসে শিশু ও নারী পাচারচক্রের যোগসূত্র, এরপরই অপহরণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায় পকসো আইন। মামলার গুরুত্ব বুঝে রানাঘাট জেলা পুলিশ ডিএসপি-র নেতৃত্বে গঠন করে বিশেষ তদন্তকারী দল।
কিন্তু অভিযুক্ত ছিলেন চরম ধূর্ত। প্রায় কুড়ি রাজ্য ঘুরে বারবার অবস্থান বদল করছিলেন তিনি। টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করলেও মুহূর্তে গা-ঢাকা দিচ্ছিলেন। গত এক মাস ধরে তাঁকে নজরে রাখা হচ্ছিল নামখানা ও কাকদ্বীপ এলাকায়। খবর পেয়ে এসওজি ও বিশেষ তদন্তকারী দল স্থানীয়দের সঙ্গে সমন্বয় করে ছক কষে। সূত্রে জানা যায়, মৎস্যজীবীদের একটি নৌকায় আশ্রয় নিয়ে মাঝসমুদ্রে লুকিয়ে রয়েছেন অভিযুক্ত।
অভিযানকে সফল করতে চার সদস্যের একটি দলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দু’জন সাব-ইনস্পেক্টর ও দু’জন কনস্টেবল মৎস্যজীবীর বেশে সাগরে পাড়ি দেন। প্রায় ১০ কিলোমিটার গভীরে গিয়ে নৌকাটিকে ঘিরে ফেলে পুলিশ। অপ্রস্তুত অবস্থায় মাঝসমুদ্রেই ধরা পড়ে অভিযুক্ত।
রানাঘাট জেলা পুলিশের সুপার আশিসকুমার মৌর্য জানিয়েছেন, প্রায় এক বছর ধরে এই আসামি পলাতক ছিল। নারী ও শিশু পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। টিম ওয়ার্কের ফলেই সম্ভব হয়েছে এই অভিযান। মাঝসমুদ্রে গিয়ে আসামিকে গ্রেফতার করা পুলিশের অন্যতম সাফল্য। শনিবারই ধৃতকে আদালতে তোলা হচ্ছে। দীর্ঘ এক বছরের পলাতক জীবনের ইতি টানল পুলিশের এই অভিনব ‘সমুদ্র অভিযান’।