টানা দ্বিতীয় দিন রহস্যজনক প্রাণীর পায়ের ছাপ ঘিরে বাঘের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে লালগড়ে। আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়ে গেছে লালগড়বাসীর। বৃহস্পতিবার জনাশুলি ও লক্ষ্মণপুরের অরণ্যে যে অচেনা থাবার ছাপ পাওয়া গিয়েছিল, শুক্রবার ভাউদি বিটের চালপুরা জঙ্গলেও মিলল একই ধরনের ছাপ। ফলে এলাকায় ফের একবার শুরু হয়েছে গুঞ্জন, তাহলে কি সত্যিই রয়েল বেঙ্গল টাইগার ঢুকে পড়েছে লালগড়ের অরণ্যে?
আরও পড়ুন: লালগড়ে ফের বাঘের আতঙ্ক, লক্ষ্মণপুরের জঙ্গলে মিলল রয়্যাল বেঙ্গলের পায়ের ছাপ
শুক্রবার সকালে চালপুরা জঙ্গলে কাঠ-পাতা সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রথম পায়ের ছাপ লক্ষ্য করেন স্থানীয়রা। খবর ছড়াতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের গ্রামগুলিতে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বৃহস্পতিবার জনাশুলি ও লক্ষ্মণপুর জঙ্গলে পাওয়া ছাপগুলিও আকারে অনেক বড় ছিল। মাপ অনুযায়ী, লম্বায় প্রায় ১১ সেন্টিমিটার, চওড়ায় ১০ সেন্টিমিটার। বনকর্মীরা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন, এই মাপ রয়েল বেঙ্গল টাইগারের থাবার সঙ্গে মিলে যায়।যদিও বন দফতরের তরফে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু নিশ্চিত করা হয়নি। তবে সূত্রের খবর, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জঙ্গলে বসানো হচ্ছে একাধিক ট্র্যাপ ক্যামেরা। প্রাথমিকভাবে পাঁচ থেকে ছয়টি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। বনকর্মীরা আপাতত এলাকায় কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন।
স্থানীয়দের মতে, ওই জঙ্গলে আগেই রয়েছে ৩৫ থেকে ৪০টির মতো হাতির দল। নিয়মিত গ্রামে ঢুকে পড়ে ফসল নষ্ট করে চলেছে তারা। তার উপর যদি সত্যিই বাঘের আবির্ভাব ঘটে থাকে, তবে জঙ্গলঘেরা গ্রামগুলির জন্য পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। ফলে একদিকে হাতির উৎপাত, অন্যদিকে বাঘের আতঙ্ক দ্বিগুণ চাপের মুখে পড়েছে গ্রামবাসীরা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পায়ের ছাপ পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বহু মানুষ জঙ্গলে যাওয়া একেবারে বন্ধ করে দিয়েছেন। কাঠ, পাতা কিংবা অন্য কোনও প্রয়োজনে কেউ আর ঝুঁকি নিয়ে অরণ্যের ভেতরে প্রবেশ করছেন না। তাঁদের মতে, হাতির হাত থেকে বাঁচাই কঠিন, এখন যদি বাঘও আসে তাহলে জঙ্গল লাগোয়া জীবনযাত্রা অচল হয়ে যাবে।
দুই দিন ধরে বারবার একই ধরনের ছাপ পাওয়ায় বন দফতরের অন্দরে জল্পনা বাড়ছে। এলাকায় সত্যিই বাঘ এসেছে নাকি অন্য কোনও বড় জন্তু, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক এখন তুঙ্গে।