কলকাতার শহরতলি বেলঘরিয়ার যতীন দাস নগরে সারমেয়প্রীতি ঘিরে তৈরি হল বড়সড় অশান্তি। অভিযোগ, প্রতিবেশীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন এক দম্পতি। ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁদের। সারমেয়কে খাওয়াতে গিয়ে তারা আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ। পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমেছে।
আরও পড়ুন: পথ কুকুরের হামলা রুখতে সাফল্যের নজির গড়ল পশ্চিমবঙ্গ, কমল কামড়ের ঘটনা
প্রতিবেশীদের দাবি, রাতদিন কুকুরের চিৎকার, রাস্তায় মলমূত্রের দুর্গন্ধ ও ছুটোছুটি করে তাড়া করার ঘটনায় জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সারমেয়প্রেমী ওই দম্পতির বক্তব্য একেবারেই আলাদা। তাঁদের দাবি, তাঁরা ১১টি দেশি কুকুর নিজের বাড়িতে লালনপালন করেন এবং পথকুকুরদেরও নিয়মিত খাবার দেন। আর এই কারণেই তাঁদের উপর ক্রমাগত মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল, এমনকি সম্প্রতি তিনটি কুকুরকে মেরে ফেলারও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। ঘটনার সূত্রপাত গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতের ঘটনা থেকে। জানা গেছে, বাড়ির সামনে কয়েকটি পথকুকুরকে খাওয়াচ্ছিলেন সাগর ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী। সেই সময়ই ফের প্রতিবেশীদের সঙ্গে তীব্র বচসা বাঁধে, যা পরে হাতাহাতিতে গড়ায়।
সাগরবাবুর অভিযোগ, তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তিনি থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন। সাগর ঘোষ পেশায় টেবিল টেনিস কোচ। তিনি জানান, কুকুরদের সন্তানের মতো দেখেন। নিজেদের সামর্থ্য মতো খাওয়ান। অথচ প্রতিদিন হুমকি-ধমকি শুনতে হচ্ছে। এবার শারীরিক আক্রমণও হল। প্রয়োজনে আইনি পথে যাবেন বলেও জানান।
অন্যদিকে, প্রতিবেশী রিঙ্কি দেবের পালটা দাবি, তাঁরা কখনও কুকুরবিরোধী নন। কিন্তু এত কুকুর রাখলে স্বাভাবিকভাবেই শব্দদূষণ, দুর্গন্ধ আর নিরাপত্তাজনিত সমস্যা তৈরি হয়। দম্পতিকে মারধরের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অজিতা ঘোষ স্বীকার করেছেন, সমস্যার কথা বারবার শুনেও কার্যকর সমাধান হয়নি। তাঁর কথায়, ওই এলাকায় পুরসভার সাফাই কর্মীরাও ঢুকতে চান না। বহুবার চেষ্টা করেও ফল হয়নি।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে দিল্লি-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পথকুকুরদের নিয়ে আদালতের নির্দেশ ও বিতর্ক চলছেই। সুপ্রিম কোর্টও পথকুকুরদের সুরক্ষা ও খাওয়ানো নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। তবুও এ ধরনের ঘটনা সেই নিরাপত্তা প্রশ্নকে আরও উসকে দিল বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।