পুজোর মুখে বিপর্যয়ের আশঙ্কা উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতলে। টানা প্রবল বর্ষণে তিস্তা সহ একাধিক পাহাড়ি নদী উত্তাল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে তিস্তা ও জলঢাকা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় ইতিমধ্যেই ‘লাল সতর্কতা’ জারি করেছে সেচ দফতর। সেভক হয়ে সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ও কালিম্পংয়ের তিস্তা বাজারের উপর দিয়ে নদীর জল বইতে শুরু করায় বিপর্যস্ত যানবাহন চলাচল। ফলে পর্যটন মরশুমের আগে প্রশাসন যেমন দুশ্চিন্তায়, তেমনই বিপাকে সাধারণ মানুষও।
আরও পড়ুন: মেরামতির জন্য ছিল বন্ধ, দুর্গাপুজোর ১ মাস আগেই খুলে যাচ্ছে তিস্তা ব্যারেজের সেতু
শুক্রবার সকালেই তিস্তার জল গড়িয়ে যায় জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে। পাশাপাশি উত্তর সিকিমে একাধিক জায়গায় ধস নামায় রাস্তা বন্ধ। দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন অঞ্চলেও একই ছবি, গাছ উপড়ে যাওয়া, পাহাড়ি মাটি ভেসে নেমে আসা, সড়ক অবরুদ্ধ হওয়া। সেভক ও রঙপো রুটের মতো গুরুত্বপূর্ণ পথেও যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ডুয়ার্সেও দেখা দিয়েছে ভয়াবহ চিত্র। বীরপাড়া-গেরগেন্ডা সেতুর একটি অংশ ভেঙে পড়ায় অল্পের জন্য রক্ষা পান ছয়জন নির্মাণ শ্রমিক। অন্যদিকে ফুলবাড়ি মহানন্দা ব্যারেজের ৯ নম্বর গেটের নীচে আটকে গিয়েছে বিশাল আকারের গাছের গুঁড়ি। নদীর প্রবল স্রোতে পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার সকালেই জলপাইগুড়ি শহরের একাধিক এলাকা জলে তলিয়ে যায়। পাণ্ডাপাড়া, মহামায়া পাড়া, কদমতলা সহ বহু পাড়া প্লাবিত। করলা নদীতে কাপড় ধোয়ার সময় ভেসে গিয়েছেন এক মহিলা। জুরন্তী নদীর জল ঢুকে জলমগ্ন হয়েছে বাগরাকোট। ওদলাবাড়ির দক্ষিণ বিধানপল্লি এবং ক্রান্তির চাপাডাঙা, চাতরারপাড় গ্রামও তিস্তার জলে প্লাবিত। কালিম্পংয়ের তিস্তা বাজার বাজারও একইভাবে ডুবে যায় বৃষ্টির জলে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই রাজ্য প্রশাসন ও স্থানীয় দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় এমনিতেই দুর্গা পুজোর আগে ভিড় বাড়তে শুরু করে। কিন্তু এই পরিস্থিতি পর্যটন শিল্পের জন্য বড় ধাক্কা হতে চলেছে।