প্রেমের গানে সিদ্ধহস্ত কুমার শানু। তাঁর গান শুনে প্রেমে পড়েছে গোটা একটা প্রজন্ম। বাস্তব জীবনেও প্রেমিক মানুষ সঙ্গীতশিল্পী। তাই তো বারবার প্রেমে পড়েছেন তিনি। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে রীতা ভট্টাচার্যর সঙ্গে সাত পাক ঘুরেছিলেন কুমার শানু। কিন্তু দুজনের দাম্পত্য সুখের হয়নি। দীর্ঘদিনের তিক্ততার পরিণতি ছিল ডিভোর্স।
সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে গায়কের প্রাক্তন স্ত্রী অভিযোগ করেন, যখন ছোটছেলে জান কুমার শানুর তাঁর গর্ভে ছিল সেইসময় শানু ও তাঁর পরিবার রীতার উপর নির্যাতন করেছিল। তিনি আরও অভিযোগ করেছিলেন যে আশিকির সাথে খ্যাতি অর্জনের পরে হঠাৎ করেই স্ত্রীর প্রতি গায়কের আচরণ পুরোপুরি পরিবর্তিত হয়েছিল।
রীতা ভট্টাচার্য বলেছেন যে কুমার শানু গর্ভাবস্থায় তাঁর উপর নির্যাতন করেছিলেন। রীতা দাবি করেন যে কুমার শানু খুব নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেন এবং স্ত্রীকে বাড়ির বাইরে যেতে দিতেন না। তিনি আরও প্রকাশ করেছিলেন গায়কের বোন তাঁর নিজের স্বামী-সন্তান ছেড়ে দাদার সংসারে পড়ে থাকত। শুধু তাই নয়, কুমার শানুর সাথে একই ঘরে ঘুমাত তাঁর বোন, অন্যদিকে বাচ্চাদের সাথে অন্য ঘরে ঘুমাতেন রীতা। তিনি আরও দাবি করেছিলেন যে ভাইবোন দুজনেই তাঁর উপর নির্যাতন করেছিল। তিনি বলেন, ‘গর্ভাবস্থায় শানু আমাকে আদালতে নিয়ে যায়। সেই সময় তাঁর একটি সম্পর্কও ছিল, যা আজ প্রকাশিত হয়েছে। এবং, তিনি আমাকে টেনে আদালতে নিয়ে গিয়েছিলেন? আমি তখন খুব ছোট ছিলাম, আমার মনে হয়েছিল আমার পুরো পৃথিবী চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে, এবং আমার পরিবার হতবাক হয়েছিল। এক বছর আগে তিনি এত বড় পার্টি করেছিলেন, বলেছিলেন যে আমিই তার সাফল্যের কারণ। কারণটা জানতে পারিনি। তিনি আদালতে আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করতেন এবং আমাকে নিয়ে মজা করতেন’।
রীতা আরও দাবি করেছিলেন ছোটছেলে জান গর্ভে আসার পর শানু তাঁকে খেতে দিতেন না। তিনি বলেন, 'তারা রান্নাঘরে তালা লাগিয়ে দিত। এক মুঠো চাল কিনে বৌদির বাড়িতে খিচুড়ি রান্না করতাম, তারপর খাবার খেতাম। এমনকি তারা আমার বাচ্চাদের জন্য দুধের প্যাকেটও বন্ধ করে দিয়েছিল, আমাকে দিনে মাত্র ১০০ টাকা দিয়েছে এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞকে বলেছিল যে আমরা আপনার টাকা দেব না। তাঁদেরকে মানুষ বলাটাও ভুল হবে। আমি যখন বেবি ফুড অর্ডার করতাম, তখন দোকানদার বলতেন পাঠাতে পারব না, স্য়ার বারণ করেছেন।
রীতা ও কুমার শানুর কলকাতায় দেখা হয়, প্রথম দেখাতেই প্রেম। এরপর আশির দশকের শেষের দিকে পরিবারের সম্মতি ছাড়াই বিয়ে করেছিলেন দুজনে, যদিও তাঁদের পরিবার পরে এই বিয়েকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৯৪ সালে বিবাহবিচ্ছেদের আগে এই দম্পতির তিনটি সন্তান ছিল। একটা সময় শানুর সঙ্গে এক নামী বলিউড নায়িকার ঘনিষ্ঠতার কথা চাউর হয়।
অভিনেত্রী কুনিকা সদানন্দের সঙ্গেও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন শানু। কুনিকা পরে বিগ বস ১৯ এ স্বীকার করেছিলেন যে একজন বিবাহিত পুরুষের সাথে তাঁর ছয় বছরের সম্পর্ক ছিল। কুনিকার ছেলে আয়ান লাল পরে কুমার শানুর সাথে মায়ের সম্পর্ককে ‘বিষাক্ত’ বলে বর্ণনা করেন।
কুনিকার প্রেম-সহবাসের পর সেই সম্পর্কও ভেঙে যায়। অবশেষে শালোনিকে বিয়ে করেন গায়ক। তাঁর সঙ্গেই এখন সুখী সংসার শিল্পীর। শালোনি ও শানুর দুই কন্যা সন্তান রয়েছে।