শুল্ক বৃদ্ধি, বাণিজ্য দ্বন্দ্ব এবং এখন এইচ১বি ভিসা ইস্যুতে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে চিড় যেন আরও চওড়া হচ্ছে। এরই মাঝে গতকাল মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও-র সঙ্গে দেখা করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বৈঠকের পর রুবিও বলেন, ভারত ওয়াশিংটনের জন্য 'গুরুত্বপূর্ণ' অংশীদার। নিউইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে রুবিও-জয়শঙ্করের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের আনুষ্ঠানিক পাঠে রুবিও বলেন, নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রের কাছে 'অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ'। মার্কিন বিদেশ দফতর জানায়, রুবিও এবং জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠকে ভারত-মার্কিন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক যেমন বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।
এদিকে বৈঠকের পর এক্স পোস্টে ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর জানান, রুবিওর সাথে বৈঠকে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক উদ্বেগের এবং আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, 'আমাদের বৈঠকে বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় উদ্বেগ ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলিতে অগ্রগতির জন্য ধারাবাহিক যোগাযোগের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে সহমত পোষণ করেছি আমরা।'
গতকালকের বৈঠকের আগে রুবিও ও জয়শঙ্করের সর্বশেষ দেখা হয়েছিল জুলাইয়ের শুরুতে।তার আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রথমবার তাঁদের দেখা হয়েছিল ওয়াশিংটনে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের চিড় ধরার পরে এটাই এই দুই নেতার মধ্যে প্রথম মুখোমুখি বৈঠক ছিল। এদিকে এইচ১বি ভিসা নিয়েও ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ঘোষণায় প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এদিকে এরই মাঝে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল আমেরিকায় পৌঁছেছেন বাণিজ্য আলোচনার জন্য।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের উপর ৫০% শুল্ক আরোপ করেছে। উভয় দেশের সাম্প্রতিক বিবৃতি অবশ্য ইঙ্গিত করছে যে দুই দেশই তাদের মতপার্থক্য নিরসন করতে এবং সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা চলছে। এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে বাণিজ্য আলোচনায় বসেছিল দুই দেশের কর্মকর্তারা। বৈঠক শেষে উভয় পক্ষই জানিয়েছিল, তাদের আলোচনা ইতিবাচক হয়েছিল। প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাসে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে তিক্ততা বেড়েছিল। ট্রাম্প কুকথা বলেই চলেছিলেন। এদিকে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, মোদী নাকি ৪ বার ট্রাম্পের ফোন তোলেননি। এরই মাঝে ট্রাম্প 'সুর বদল' করেন কিছুটা। মোদীকে তাঁর জন্মদিনে ফোন করেন ট্রাম্প। এই আবহে মোদীও আশা প্রকাশ করেন যে, ভারত-মার্কিন বাণিজ্য আলোচনা যত শীঘ্র চূড়ান্ত হবে, তত ভালো।