সারারাত অবিরাম বৃষ্টিতে কলকাতায় দুর্যোগ। এদিকে এই বিপর্যয়ে একের পর এক মৃত্যু ঘটেছে শহরে। রিপোর্ট অনুযায়ী, নেতাজিনগরে, কালিকাপুরে, বালিগঞ্জ প্লেস, বেনিয়াপুকুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে পথ চলতি মানুষের। পরিস্থিতি এমনই, বেশ কিছু জায়গায় মৃতদেহ উদ্ধারও করা যাচ্ছে না জল জমে থাকার কারণে। জমা জলের ওপরেই পড়ে রয়েছে দেহ। এই আবহে জায়গায় জায়গায় খোলা মিটার বক্স বা ল্যাম্পপোস্ট থেকে ছেঁড়া তার আতঙ্ক বাড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের মনে।
জানা গিয়েছে, নেতাজিনগরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক সাইকেল আরোহীর। তাঁর দেহ রাস্তায় জমা জলের ওপরে পড়ে থাকে দীর্ঘক্ষণ। শর্ট সার্কিট হয়ে থাকায় দমকল সেখানে ঢুকতে পারেনি দেহ উদ্ধার করতে। এই আবহে সিইএসসি-কে খবর দেওয়া হয় এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য। এদিকে নেতাজিনগর ছাড়াও বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে কালিকাপুর, বালিগঞ্জ প্লেস, বেনিয়াপুকুরেও।
উল্লেখ্য, রাতভর নাগাড়ে বৃষ্টিতে কলকাতার বিভিন্ন রাস্তা এবং এলাকা এখন জলমগ্ন। এজেসি বোস রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ত সড়কে হাঁটু জল। সেখানে ট্যাক্সি বা ছোট কোনও যানবাহন চলতেই পারছে না। অবশ্য শুধু কলকাতা নয়, গোটা দক্ষিণবঙ্গ জুড়েই গতকাল রাতে অবিরাম বৃষ্টি হয়েছে। আর সেই বৃষ্টির 'ফলাফল' দেখা যাচ্ছে সকালের আলো ফোটার পরে। কলকাতার বহু অঞ্চলে মানুষের বাড়িতে জল পর্যন্ত ঢুকে গিয়েছে। সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৪টে পর্যন্ত নিকাশি পাম্পিং স্টেশন ভিত্তিক বৃষ্টিপাতের পরিমাপ অনুযায়ী, মানিকতলায় বৃষ্টি হয়েছে ১৪৭ মিমি, কামডহরি এলাকায় বৃষ্টির পরিমাণ ২৪৫ মিমি। তপসিয়া, বালিগঞ্জ বৃষ্টির পরিমাণ ২৪০ মিমির ওপরে। উল্টোডাঙা, কাঁকুড়গাছি এলাকাও জল থৈ থৈ অবস্থা।
কলকাতা ছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলিতেও এই বৃষ্টিপাতের প্রভাব পড়েছে। এদিকে আজও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি (৭০ মিলিমিটার থেকে ২০০ মিলিমিটার) হতে পারে। তাই কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা, পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া এবং হুগলিতে ভারী বৃষ্টি (৭০ মিলিমিটার থেকে ১১০ মিলিমিটার) হতে পারে। তাই ওই সাতটি জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।