তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু শহরে প্রবেশ করলেই গ্রেফতার করার নির্দেশ দেবেন নিউ ইয়র্ক পুলিশকে (এনওয়াইপিডি)। এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন নিউ ইয়র্ক সিটির ডেমোক্রেটিক মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় বংশোদ্ভূত জোহরান মামদানি বলেন, ‘এটি এমন এক প্রতিশ্রুতি যা আমি পূরণ করতে চাই।’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কর্তৃত্ব না মানলেও মামদানি বলেছেন, তিনি আদালতের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানাকে সম্মান জানাবেন এবং নেতানিয়াহুকে বিমানবন্দরে আটকের পর গ্রেফতার করবেন। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। মামদানি জানান, 'এই শহর আন্তর্জাতিক আইনের পক্ষে দাঁড়াবে এবং তা নিশ্চিত করাই আমার লক্ষ্য।'
আরও পড়ুন-'২৪৩ আসনেই আমি প্রার্থী!' তেজস্বীর ঘোষণায় বিহারে জটিলতা, বিরোধী জোটে আসন সঙ্কট
বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইহুদি ধর্মাবলম্বীর বসবাস রয়েছে নিউ ইয়র্কে। ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যদি গ্রেফতারি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন মামদানি, তাহলে তিনি ব্যাপক বিরোধিতার মুখে পড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি প্যালেস্টাইনিদের ‘গ্লোবালাইজ দ্য ইন্তিফাদা ’ স্লোগানের নিন্দা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ইহুদি জাতীয়তাবাদবিরোধী এই স্লোগানের মাধ্যমে প্যালেস্টাইনি প্রতিরোধের প্রতি সমর্থন জানাতে আন্তর্জাতিক সংহতির আহ্বান জানানো হয়। যদিও মামদানি বলেছেন, তিনি এই স্লোগানের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করবেন। এছাড়াও নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করা আইনি দিক থেকে জটিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকী তাঁকে গ্রেফতার করাও কার্যত অসম্ভব হতে পারে। প্রথমত, গ্রেফতারির জন্য নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্ক সিটি কিংবা অঙ্গরাজ্যের কোনও আইন ভঙ্গের অভিযোগ থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, তিনি যদি কোনও অপরাধে অভিযুক্তও হন, তারপরও রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তিনি কূটনৈতিক সুরক্ষা পাবেন।
আরও পড়ুন-'২৪৩ আসনেই আমি প্রার্থী!' তেজস্বীর ঘোষণায় বিহারে জটিলতা, বিরোধী জোটে আসন সঙ্কট
আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে এগিয়ে থাকা জোহরান মামদানি বলেন, অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় পর্যায়ের ডেমোক্র্যাটদের এমন পদক্ষেপ নিতে হবে; যা ফেডারেল সরকার নেবে না। তিনি বলেন, 'বর্তমানে নেতৃত্বের জন্য আমরা ফেডারেল সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারি না। এখন শহর ও অঙ্গরাজ্যগুলিকে দেখাতে হবে কীভাবে আমাদের নিজস্ব মূল্যবোধ ও জনগণের পক্ষে দাঁড়াতে হয়।' এই প্রসঙ্গে মামদানি ২০০৪ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজমের উদাহরণ দিয়েছেন। সেই সময় সান ফ্রান্সিসকোর মেয়র ছিলেন তিনি এবং ফেডারেল আইন অমান্য করে সমলিঙ্গ বিবাহের লাইসেন্স ইস্যু করেছিলেন। তিনি বলেন, ২০২৩ সালে যার বিরুদ্ধে আইসিসি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল, সেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ নেবেন। কলম্বিয়া ল স্কুলের অধ্যাপক ম্যাথিউ সি ওয়াক্সম্যান দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, মামদানির এই ইচ্ছা একটি গুরুতর আইন প্রয়োগের নীতি নয়, বরং রাজনৈতিক প্রদর্শনী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারির এরকম কোনও নজির নেই।