মিচেল স্টার্কের আগুনে পুড়ে খাক সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ব্যাটাররা। রবিবার (৩০ মার্চ) আইপিএলের ১০ নম্বর ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে বিধ্বংসী পারফরম্যান্স করেন মিচেল স্টার্ক। দিল্লি ক্যাপিটালসের প্রথম বোলার হিসেবে ৫ উইকেট তুলে নেন তিনি। সেই সঙ্গে ফিল্ডিংয়ের সময়ে দিল্লির প্লেয়াররাও মন জয় করেছেন। বিশেষ করে জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক এবং অক্ষর প্যাটেলের দু'টি ক্যাচ একেবারে চোখ ধাঁধানো। এছাড়া ফ্যাফ ডু'প্লেসি এবং বিপ্রজ নিগমও ২টি ভালো ক্যাচ ধরেন। একজন বাজ পাখি তো, অন্য জন শিকার ধরতে আসা চিল। দুই তারকার ক্ষিপ্রতায় ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট হারায় হায়দরাবাদ।
বাজপাখির মতো ছোঁ মেরে ক্যাচ ম্যাকগার্কের
দিল্লির হয়ে ১৬তম ওভারে বল করতে এসেছিলেন কুলদীপ যাদব। প্রথম দুই বলে হয় তিন রান। চতুর্থ বলে লম্বা ছক্কা হাঁকান অনিকেত বর্মা। পঞ্চম বলে ফের বড় শটই খেলতে গিয়েছিলেন অনিকেত। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। কুলদীপের বলে জোরালো পুল শট মেরেছিলেন। ভালো টাইমিং-ও ছিল। নিশ্চিত ছক্কা হওয়ার কথা। কিন্তু ডিপ মিডউইকেটে বাউন্ডারি লাইনের ধারে ফিল্ডিং করছিলেন ম্যাকগার্ক। তিনি বিশাল বড় লাফ দিয়ে বাজপাখির মতো ছোঁ মেরে বল ধরে ফেলেন। অবিশ্বাস্য একটি ক্যাচ নেন তিনি। কিন্তু ক্যাচ ধরার পর নীচে যখন পড়ে যাচ্ছিলেন ম্যাকগার্ক, তখন আর একটু হলেই বাউন্ডারিতে পা ঠেকে যেত। তবে ম্যাকগার্ক শরীরের ব্যালেন্স ঠিক রাখেন। পিছনের দিকে পড়লেই, আউটের বদলে ছক্কা হয়ে যেত।
আরও পড়ুন: এই নিয়ে ছ'বার ট্র্যাভিস হেডকে আউট করলেন, হল নজির, সঙ্গে ৫ উইকেট নিয়েও বড় রেকর্ড স্টার্কের
ম্যাকগার্কের এই ক্যাচ দেখে হতভম্ব ক্রিকেট প্রেমীরা। একেবারে নিখুঁত টাইমিংয়ে ক্যাচটি ধরেন ম্যাকগার্ক। যার ফলে অনিকেত বর্মাকে ফিরতে হয় সাজঘরে। হায়দরাবাদের ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন অনিকেত বর্মা। তিনি ৪১ বলে ৭৪ রানের দুরন্ত একটি ইনিংস খেলেন। তাঁর এই ইনিংস সাজানো ছিল ছ'টি ছক্কা এবং পাঁচটি চারে। অনিকেতের এই ইনিংসের সৌজন্যেই হায়দরাবাদ শেষ পর্যন্ত ১৬৩ রানে পৌঁছয়।
বিস্মিত করলেন অক্ষর, দুরন্ত ক্যাচ নিলেন বিপ্রজ, ফ্যাফও
ম্যাকগার্কের ক্যাচের পর সকলকে বিস্মিত করেন অক্ষর প্যাটেলও। ১৯তম ওভারে তখন বল করছিলেন মিচেল স্টার্ক। এই ওভারের দ্বিতীয় বলে হর্ষাল প্যাটেল কভার ড্রাইভ মেরেছিলেন। তবে মিড-অফের দিকে ক্যাচ ওঠে। অক্ষরের জন্য ক্যাচটি বেশ কঠিন ছিল। কিন্তু তিনি একাগ্র মনে বলটি লক্ষ্য করে বাঁ-দিকে কিছুটা দৌড়ে এসে, ডাইভ দিয়ে উড়ন্ত অবস্থায় ক্যাচটি ধরেন। নিঃসন্দেহে এটি একটি বিস্ময়কর ক্যাচ ছিল। হর্ষালকে ৯ বলে ৫ করে সাজঘরে ফিরতে হয়। এছাড়াও দিল্লির অলরাউন্ডার বিপ্রজ নিগম এবং সহ-অধিনায়ক ফ্যাফ ডু'প্লেসিও এদিন দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছেন। ১৯তম ওভারেই ৪০ বছর বয়সী ফ্যাফ অতিরিক্ত কভারে উইয়ান মুলডারের একটি চমকপ্রদ ক্যাচ নিয়ে সবাইকে অবাক করে দেন। এর আগে ১১তম ওভারে মোহিত শর্মার বলে হেনরিখ ক্লাসেনের বিস্ময়কর ক্যাচ নেন বিপ্রজ।
হারল হায়দরাবাদ
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন হায়দরাবাদের অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে, মিচেল স্টার্কের দাপটে এদিন পুরো ২০ ওভারও খেলতে পারেনি হায়দরাবাদ। ১৮.৪ ওভারে ১৬৩ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। অনিকেত বর্মার ৪১ বলে ৭৪ রানের দুরন্ত ইনিংসটিই বড় পুঁজি ছিল এসআরএইচের। এছাড়া ১২ বলে ২২ করেন ট্র্যাভিস হেড। ১৯ বলে ৩২ করেন হেনরিখ ক্লাসেন। বাকিরা কেউ এক অঙ্কের গণ্ডি টপকাতে পারেননি। দিল্লির হয়ে ৫ উইকেট একাই তুলে নেন স্টার্ক। কুলদীপ নেন ৩ উইকেট।
আরও পড়ুন: ভারতীয় ড্রাগের কারণেই শেন ওয়ার্নের মৃত্যু? সামনে এল বিস্ফোরক তথ্য
জবাবে রান তাড়া করতে নেমে ২৪ বল বাকি থাকতে, ৭ উইকেটে সহজ জয় ছিনিয়ে নেয় দিল্লি ক্যাপিটালস। তারা ১৬ ওভারেই ৩ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান করে ফেলে। দিল্লির হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন ফ্যাফ ডু'প্লেসি। ২৭ বলে ৫০ করেন তিনি। এছাড়া ৩২ বলে ৩৮ করেছেন জ্যার ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক। ১৮ বলে অপরাজিত ৩৪ করেছেন অভিষেক পোড়েল। ১৪ বলে ২১ করে অপরাজিত থাকেন ত্রিস্তান স্টাবস। হায়দরাবাদের হয়ে একাই তিন উইকেট নিয়েছেন জেসর আনসারি।