ইংল্যান্ডের এজবাস্টন থেকে বিহারের সাসারামের দূরত্ব বহু ক্রোশ। আর বিহারের সাসারাম আজ ঘরের ছেলের সাফল্যে মাতোয়ারা। বিহারের ভূমিপুত্র আকাশদীপের আগুনে বোলিং এ এজবাস্টনে ঘুম ছুটেছে ইংল্যান্ডের। ভারত বনাম ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় টেস্টে স্বপ্নের স্পেলে ১০ উইকেট পকেটে পোরার পর ঘরের ছেলে আকাশদীপকে নিয়ে বাড়িতে কী রকম উদযাপন চলবে? এই প্রশ্ন ম্যাচ শেষে চেতেশ্বর পূজারা করছিলেন আকাশকে। উত্তরে, আবেগঘন আকাশ তাঁর দিদির কথা বলেন। বাংলায় ক্রিকেট কেরিয়ার গড়ে তোলা এই পেসার তুলে ধরেন দিদির অসুস্থতার কথা। আর একইসঙ্গে বলেন,'দিদিকে উৎসর্গ করেই এই ম্যাচটা খেলছিলাম।'
দ্বিতীয় টেস্টে ৩৩৬ রানের জয়ে ভর করে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে ভারত। যার মধ্যে ১০ উইকেটের ঝাঁঝালো স্পেল রয়েছে বিহারের ভূমিপুত্র আকাশদীপের। ডানহাতি এই স্পিডস্টার দ্বিতীয় ইনিংসে ছয় উইকেট নেন এবং তার প্রচেষ্টায় ভারত ইংল্যান্ডকে ২৭১ রানে গুটিয়ে যায়। বুমরাহ-হীন ভারতের বোলিং অ্যাটাকে কার্যত অন্যতম দারালো অস্ত্র হিসাবে ছিলেন আকাশ। খেলা শেষ হওয়ার পর, জিওহটস্টারের সাথে ম্যাচ-পরবর্তী সাক্ষাৎকারে আকাশ দীপ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। চেতেশ্বর পূজারার সাথে কথা বলতে গিয়ে আকাশ দীপ বলেন, যে এই ম্যাচ তিনি তাঁর দিদির কথা ভেবে খেলছিলেন, যাতে দিদির মুখে খুশির ঝলক দেখা যায়। আকাশ জানান, গত ২ মাস ধরে তাঁর দিদি ক্যানসারে আক্রান্ত। দিদির এই মানসিক যন্ত্রণার কথা যে আকাশকে কতটা ভাবিয়েছে, তা ম্যাচ শেষে তাঁর আবেগঘন বার্তাতেই প্রকাশ্যে আসে। আকাশ বলেন,'সবচেয়ে বড় বিষয় আমি কাউকে বলিনি এখনও যে আমার দিদি গত ২ মাস ধরে ক্যানসারে ভুগছেন। এখন ও ভালো আছে। স্থিতিশীল আছে। সবচেয়ে বেশি খুশি ওই হবে। ২ মাস ধরে যে মানসিক অবস্থা দিয়ে ও যাচ্ছে, এটা ওর জন্য খুব খুশির। আমি এই ম্যাচটা ওঁকেই উৎসর্গ করে খেলছিলাম। ওর মুখে খুশি দেখতে চাই।' আকাশ বলেন,'গত দুই মাসে তিনি মানসিকভাবে অনেক কিছুর মধ্য দিয়ে গিয়েছেন। আমি আমার পারফরম্যান্স তাঁকে উৎসর্গ করছি।' ভারতের এই দাপুটে পেসার বলছেন,'আমি কেবল আমার পারফরম্যান্স দিয়ে তাঁকে খুশি দিতে চেয়েছিলাম।'
এরপর আকাশের কাছে প্রশ্ন যায়, বোনের জন্য কোন বার্তা দিতে চান তিনি? আকাশ হাতে বল তুলে বলেন, 'বেহেন ইয়ে তুমারে লিয়ে হ্যায়।' (এটা তোমার জন্য।) এরই সঙ্গে তিনি বলেন,' যখনই আমি বল ধরতাম। আমি শুধু তোমার কথা ভাবতাম যখন তোমার মুখ ভেসে উঠত। আমি শুধু তোমাকে সুখ দিতে চেয়েছিলাম। আমরা সবাই তোমার সাথে আছি।'