হরভজন সিং বলছেন, 'ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে বিরাট আমায় প্রশ্ন করেছিল ও ভালো ব্য়াটার কিনা, তখন আমি ওকে বলেছিলাম, যদি তুমি টেস্ট ক্রিকেটে ১০ হাজার রান করতে না পারো তাহলে তোমার নিজের ওপর লজ্জা হওয়া উচিত। তোমার মধ্যে যোগ্যতা আছে ১০ হাজার রান করার, সেটা করতে না পারলে এর জন্য তুমি নিজেই দায়ি থাকবে ’।
বিরাট কোহলি। ছবি- এএনআই
আর কয়েকদিনের অপেক্ষা, তারপরই শুরু হয়ে যাচ্ছে ভারতীয় দলের ১০ টেস্টের সিরিজ। অবশ্য একসঙ্গে টানা এক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নয়, তিনটি আলাদা দলের সঙ্গে মোট ১০টি টেস্টের সিরিজ খেলবে ভারতীয় দল। তবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বর্ডার গাভাসকর ট্রফিতে ভারতীয় দলের সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করবে বিরাট কোহলির ওপর। কারণ রোহিত শর্মা বাদ দিলে এই দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারই বিরাট কোহলি।
টেস্টেও হিটম্যান ওপেন করেন, আর ফার্স্ট ডাউনে নামেন কোহলি। অর্থাৎ সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ পজিশনই বিরাটের। যেখানে তাঁর আউট হয়ে যাওয়া মানে পুরো চাপই এসে পড়ে মিডল অর্ডারের ওপর। ভারতের ১০ ম্যাচের টেস্ট অধ্যায় শুরুর আগেই বিরাট কোহলিকে নিয়ে নষ্টালজিয়ায় ভাসলেন প্রাক্তন বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার হরভজন সিং। বললেন, বিরাটকে তিনি বলেছিলেন ১০ হাজার রান টেস্ট যদি ও না করতে পারে তাহলে সেটা ওরই ব্যর্থতা হবে। বিরাট অবশ্য এখনও ১০ হাজার রানের থেকে কিছুটা দূরেই রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময় বিরাট কোহলি যে ভারতের নিঃসন্দেহে সেরা ব্যাটার তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে দেড় দশক আগেই বিরাটের পারফরমেন্স দেখে ভাজ্জি বুঝেছিলেন এই ছেলেই একদিন ভারতীয় ক্রিকেটকে পথ দেখাবে। হরভজন সিং কোহলির ওডিআই ফরম্যাটের অভিষেক সিরিজ নিয়ে বলছেন, ‘২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে গেছিল ভারত, পঞ্চম ওডিআইতে চোটের জন্য খেলতে পারেনি সেহওয়াগ। সেই ম্যাচে ওপেন করে বিরাট অর্ধশতরান করেছিল। যেখানে অজন্থা মেন্ডিস সবাইকে আউট করে দিচ্ছিল সেখানে অসাধারণ ব্যাটিং করেছিল বিরাট।এরপর আমার জিজ্ঞাসা করেছিল কেমন খেলেছি ? আমি বলেছিলাম খুব ভালো খেলেছ, এরপরই বিরাট বলেছিল, আমার আউট হওয়া উচিত হয়নি, ওকে আরও মারতে পারতাম’।
এরপর ভাজ্জি ফিরে গেছেন বিরাটের টেস্ট কেরিয়ার শুরুর সময়ও। সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে কোহলি রান না পেলেও তাঁকে ভোকাল টনিক দিয়েছিলেন ভাজ্জি। ভারতের বিশ্বকাপজয়ী তারকার কথায়, ‘ওর টেস্ট কেরিয়ারের একদম শুরুর দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে রান পাচ্ছিল না। বারবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ফিডেল ওডওয়ার্ডস ওকে হয় বোল্ড করছিল নয় শর্ট বলে আউট করছিল। স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ ছিল বিরাটের,আমায় তখন জিজ্ঞাসা করেছিল ও আদৌ ভালো ব্যাটার কিনা? আমি তখন ওকে বলেছিলাম একটা কথা। বিরাটকে বলেছিলাম, যদি তুমি টেস্ট ক্রিকেটে ১০ হাজার রান করতে না পারো তাহলে তোমার নিজের ওপর লজ্জা হওয়া উচিত। তোমার মধ্যে যোগ্যতা আছে ১০ হাজার রান করার, সেটা করতে না পারলে এর জন্য তুমি নিজেই দায়ি থাকবে ’।
বাকিদের থেকে নিজেকে সব সময়ই আলাদা রাখার মানসিকতা রয়েছে বিরাটের। ভারতের হয়ে টেস্টে হ্যাটট্রিক নেওয়া ভাজ্জি বলছেন, ‘আমি ওকে বদলাতে দেখেছি সামনে থেকে। ওর ডায়েট, ওর মানসিকতা সব কিছু। ও সাধারণ ক্রিকেটার হয়ে থাকতে চায় না, ওর মধ্য একাগ্রতা রয়েছে এমন ক্রিকেটার হওয়ার যাকে দীর্ঘদিন মানুষ মনে রাখবে। আমার থেকেও বেশি জেদ রয়েছে ওর মধ্যে। সব সময়ই চেষ্টা করে শতরান করতে দেশের জন্য। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতীয় দল প্রথমবার ৪০০ রান তাড়া করার সাহস দেখিয়েছিল, হতেই পারে হেরে গেছিল। কিন্তু মানসিকতাটা থাকাটা জরুরি। ও ভারতীয় ক্রিকেট খুব বড় ছাপ রেখে গেছে, যেটা চিরকাল থাকবে’।