আইপিএলের শুরু থেকেই বৈভব সূর্যবংশীকে নিয়ে আলোচনা চলছিল। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই আইপিএলের দলে যোগ দিয়েছিলেন বিহারের এই ক্রিকেটার। ১ কোটির বেশি টাকাও দাম ওঠে তাঁর। এরপর আইপিএলে খেলতে নেমে সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকটার হিসেবে শতরানের পাশাপাশি ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যেও দ্রুততম শতরানের রেকর্ড গড়েন তিনি আইপিএলের মঞ্চে। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে শুরু থেকেই উঠেছে বয়স ভাড়ানোর অভিযোগ। অর্থাৎ তিনি নাকি বয়সে কারচুপি করেছেন, এই অভিযোগে লাগাতার বিদ্ধ হয়েছেন তিনি। এবার বিসিসিআইও বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে এই বিষয়ে।
বোর্ডের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এবার থেকে বয়সে কারচুপি আটকানোর জন্য ক্রিকেটারদের পৃথক বোন টেস্ট করা হবে জুনিয়র লেভেলে। এই পদক্ষেপ নেওয়া হল মূলত বৈভবের ঘটনার কথা মাথায় রেখেই। বৈভবের যখন ১৩ বছর ২৮৮দিন বয়স ছিল, তখনই দাবি করা হয়েছিল যে তাঁর বয়স ১৫। কিন্তু খাতায় কলমে এখনও তিনি ১৪ বছর পেরোননি। যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন বৈভবের বাবাও। তিনি বলছেন, ‘যখন বৈভবের মাত্র সাড়ে ৮ বছর বয়স, তখনই ও প্রথমবার বিসিসিআইয়ের বোন টেস্ট দিয়েছিল। ইতিমধ্যেও অনূর্ধ্ব ১৯ খেলেছে। আমরা কাউকে ভয় পাইনা। ওর আবারও বয়সের পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে ’।
আসলে বিতর্কের সূত্রপাত হয় বৈভবেরই কারণে। কারণ এক ভিডিয়োতে দেখা যায়, তিনি নিজেই নিজের জন্ম তারিখ ভুল বলছেন। সেই পুরনো ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই সমস্যা বাড়ে। কিন্তু বিসিসিআই কোনও ঝুঁকি না নিয়েই এই নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল। এতদিন TW3 প্রক্রিয়ার দ্বারা নির্ধারিত হত ক্রিকেটারের বয়স, এরপর ১ ফ্যক্টর যোগ করে দেখা হত যে তাঁকে সেই বয়স ভিত্তিক গ্রুপে খেলতে দেওয়া যাবে কিনা। কিন্তু এবার থেকে অনূর্ধ্ব ১৬ ক্রিকেটের ক্ষেত্রে ক্রিকেটারদের আরও একটি করে পরীকঅষা নেওয়া হবে।
বিসিসিআইয়ের এক ঘনিষ্ট সূত্র বলেছেন, 'এই সিদ্ধান্তটা নেওয়া হয়েছে যাতে ক্রিকেটারদের আসল বয়স জানা যায়, আর যাতে ক্রিকেটাররা শুধু অঙ্কের ওপর ভিত্তি করে খেলার যোগ্যতা না হারায়। বরং তাঁদের যেন বিজ্ঞানসম্মত পরীক্ষাই নেওয়া হয়। এর অর্থৎ ক্রিকেটারের হারের বয়স ১৬.৪ থাকতে হবে পুরুষদের ক্ষেত্রে আর মহিলা ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে সেটি ১৪.৯ থাকতে হবে '।
এক্ষেত্রে যদি এবারে কারোর হাড়ের বয়স ২০২৫-২৬ মরশুমের জন্য ১৫.৪ হয়, তাহলে তাঁকে আর পরবর্তী মরশুমের জন্য পরীক্ষা দিতে হবে না। কারণ ১ ফ্যাক্টর যোগ করলেও তাঁর হাড়ের বয়স ১৬.৪-এর কমেই থাকবে, যা তাঁকে অনূর্ধ্ব ১৬ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় খেলা থেকে আটকাবে না। এর বেশি হলে সমস্যা তৈরি হবে। শুধুমাত্র অঙ্কের নিরিখে যদি হাড়ের উন্নতি মাপা হত, তাহলে ক্রিকেটারদের ক্ষতি হতে পারত, সেকথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিল বিসিসিআই।