কয়েকদিন আগেই এক অপ্রত্যাশিত এবং অপ্রীতিকর ঘটনার সাক্ষী থেকেছে বেঙ্গালুরু শহর। আরসিবি আইপিএল জেতার পর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে প্রায় ২.৫ লক্ষ সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন। আরসিবির ভিকট্রি প্যারেড দেখে তাঁরা মাঠের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন ক্রিকেটারদের একঝলক দেখার জন্য। কিন্তু সেই মূহূর্তটাই বিভীষিকায় পরিণত হয়। জুনের ৪ তারিখ চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ১১জনের, এছাড়াও ৩০জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার বিসিসিআই কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে। এবার থেকে ভিকট্রি প্যারেডের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দফতরের থেকে অনুমতি বাধ্যতামুলক করে দিল বিসিসিআই।
১৮ বছরের অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়ে আমদাবাদে আইপিএল জয়ের পরই আরসিবির পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল পরের দিনই সেই জয় সেলিব্রেট করা হবে। প্রচুর সমর্থকও সোশাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পোস্ট দেখে চিন্নাস্বামীর সামনে জড়ো হয়ে গেছিলেন। দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর বিভিন্ন দফতর থেকেই তখন দাবি করা হয় যে ওইদিন অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দিতে রাজি ছিল না সেরাজ্যের সরকার। নাকি জোর করেই একপ্রকার সেই অনুষ্ঠান করার অনুমতি আদায় করা হয়। সেই নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে ১৪ জুন বোর্ডের প্যানেলের কর্তারা বৈঠকে বসেছিলেন এই নিয়ে চূড়ান্ত একটি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। সেবিষয়ে আপডেট দিতে গিয়ে শনিবারই বোর্ডের সচিব দেবজিত সাইকিয়া জানিয়েছেন, ‘যে বৈঠক হয়েছে, সেই বৈঠকের আলোচনা অনুযায়ী যে ড্রাফট রিপোর্ট তৈরি হয়েছে তা আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে, মানে ৩০ জুনের মধ্যে ’।
সেই প্যানেলের তরফে ভিকট্রি প্যারেডের আগে সরকার এবং পুলিশের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামুলক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর সেই বিষয়টায় যাতে বিসিসিআইও অবগত থাকে, তাই গোটা প্রক্রিয়াটার মধ্যে বিসিসিআইও থাকবে, বলে জানিয়েছেন বোর্ডের সচিব। আর যাতে এই ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তাই সরকার এবং পুলিশের অনুমতি ছাড়া আর কোনও এমন বিজয় মিছিল করা যাবে না ভবিষ্যৎে। বিমানবন্দর থেকে যদি বিজয় মিছিল হয়, সেক্ষেত্রে তাও পুরো প্রোটোকর অনুযায়ী করতে হবে। প্যানেলের বানানো ড্রাফট তৈরি হলে, তা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির কাছে পাঠাবে বিসিসিআই। সেই প্যানেলে বোর্ড সচিব ছাড়াও রয়েছেন বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ প্রভতেক সিং ভাটিয়া এবং সহ সভাপতি রাজীব শুক্লা।
পদপিষ্টের ঘটনার পর কর্ণাটকের ক্যাবিনেট ইতিমধ্যেই জনতাকে বড় কোনও সভার বা মিছিলের ক্ষেত্রে আয়ত্তে রাখার জন্য নয়া বিল তৈরির আবেদন জানিয়েছে। যাতে সকলেই পুলিশের নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য হন। জানা যাচ্ছে, কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার ক্ষেত্রে ইভেন্ট প্ল্যানারকেই আহত বা নিহতদের জন্য ক্ষতিপূরণের জন্য ধার্য করা হবে। কর্ণাটক হাইকোর্ট কদিন আগেই আরসিবির শীর্ষকর্তা এবং রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার কর্তাদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে, যাতে এখনই পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করতে না পারে।