নন্দীগ্রামে মন্দিরের সামনে থেকে ষাঁড় চুরি আটকাতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ। ঘটনায় পুলিশের গাড়ির এক চালক প্রাণ হারিয়েছেন। এদিকে জখম হয়েছেন আরও ২ জন পুলিশকর্মী। অভিযোগ, একটি ডাম্পার এনে তাতে সেই ষাঁড় তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল দুষ্কৃতীরা। সেই সময় পুলিশের গাড়ি তাদের আটকানোর চেষ্টা করে। পুলিশের গাড়িকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীদের সেই ডাম্পার। ঘটনায় মৃত পুলিশের চালকের নাম সহদেব প্রধান। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় দীর্ঘ পোস্ট করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। (আরও পড়ুন: 'বিহারের মানুষ চায় না যে রাজ্যটা বাংলা হয়ে যাক', মমতার সরকারকে 'অপমান' মন্ত্রীর?)
জানা গিয়েছে, ষাঁড় চুরির ঘটনা রুখতে ঘটনাস্থলে গাড়িতে করে পৌঁছেছিল পুলিশ। সেই সময় পুলিশের গাড়ি দেখে ডাম্পারে করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। তাদের আটকাতে পুলিশের চালক গাড়িটিকে গলির মোড়ে আড়াআড়িভাবে দাঁড় করায়। অভিযোগ, সেই সময় ডাম্পারটি পুলিশের গাড়িকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। এরপর পুলিশের গাড়িতে থাকা তিনজনকে রেয়াপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন চালককে। বাকি দুজনের চিকিৎসা একনও চলছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে কাছে পেয়ে ভারতের সাথে 'শত্রুতা' বাংলাদেশের? ঢাকাকে হুঁশিয়ারি দিল্লির
নিজের পোস্টে শুভেন্দু লেখেন, 'নন্দীগ্রাম থেকে 'নন্দী মহারাজকে' চুরি করে পালানোর সময় পুলিসের ড্রাইভারকে খুন করল দুষ্কৃতীরা। মমতার শান্তির ছেলেরা নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়ায় সিদ্ধনাথ শিবঠাকুর জিউ মন্দিরের সামনে থেকে 'নন্দী মহারাজকে' চুরি করার বদ উদ্দেশ্যে আসে। সেখানে জোরপূর্বক 'নন্দী মহারাজকে' গাড়িতে তুলেতে যাওয়ার সময় পুলিশের গাড়ি চালক সহদেব প্রধানের বাধার সম্মুখীন হয়। বাধা পেয়ে দুষ্কৃতীরা নৃশংসভাবে ভাবে খুন করে সহদেব প্রধানকে। সহদেব প্রধান আমার বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামের বাসিন্দা। তাঁর অপরাধ শুধুমাত্র দুষ্কৃতীদের আটকানো নয়, চিরাচরিত সনাতনী ভাবাবেগকে মান্যতা দিয়ে প্রতিরোধ করা। এর জন্যেই আজ প্রাণ ত্যাগ করতে হল সহদেব প্রধানকে।' (আরও পড়ুন: 'বাঙালি হিন্দুদের জন্যে হুমকি মমতা', ওয়াকফ হিংসার আবহে তীব্র আক্রমণ মিঠুনের)
আরও পড়ুন: টাইমের ১০০ প্রভাশালীর তালিকায় ইউনুস, নেই কোনও ভারতীয়, তবে আছে ভারত যোগ
এরপর শুভেন্দু আরও লেখেন, 'দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে বারংবার ষাঁড় ও গরু চুরি চক্রের দুষ্কৃতীরা রাতের অন্ধকারে পূর্ব মেদিনীপুরে হানা দিচ্ছে। আগেও ভূপতিনগর, ভগবানপুর, চন্ডীপুরে এই ঘটনা ঘটেছে। দুষ্কৃতীরা বেপরোয়া হয়ে এই অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নানাপ্রান্তে শিব মন্দির রয়েছে। এইসব মন্দিরে ভক্তরা ভগবান শিবের বাহনকে সযত্নে খাওয়ার দেন। তাই পূর্ব মেদিনীপুরে নন্দী মহারাজদের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে বেশি। আর সেজন্যই দক্ষিণ ২৪ পরগনা সহ অন্যান্য জেলার ষাঁড় ও গরু চুরি চক্রের শাগরেদরা রাত নামলেই এই জেলায় হানা দিচ্ছে। গাড়ি নিয়ে দুষ্কৃতীরা প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছে। আজ এদের আটকাতে গিয়ে প্রাণ হারালেন সহদেব প্রধান। এই রাজ্যে যেখানে সনাতনী সংস্কৃতি রক্ষা করতে গিয়ে পুলিশ কর্মীরা নিরাপদ নন, সেখানে তো সাধারণ মানুষকে তো ঘরছাড়া হতেই হবে।'