২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে শক্ত ঘাঁটি গড়তে নেমে পড়ল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। রাজস্থানের যোধপুরে আয়োজিত সমন্বয় বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে নেওয়া হয়েছে বলে সংগঠন সূত্রে খবর। মূল লক্ষ্য, ভোটের আগে সংগঠনের বিস্তার ও মতাদর্শকে আরও গভীরভাবে পৌঁছে দেওয়া বাংলার ঘরে ঘরে।
আরও পড়ুন: ভগবান রাম ও শিবাজি আর কতবার বাঁচাতে আসবেন? হিন্দুদের বার্তা মোহন ভাগবতের
সঙ্ঘের শীর্ষ নেতৃত্বের পর্যবেক্ষণ, উত্তরবঙ্গে সংগঠন এখন দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। তাই উত্তরবঙ্গকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে শাখা বাড়ানো ও স্থানীয় প্রচারকদের সক্রিয় করার রূপরেখা তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে দক্ষিণবঙ্গ ও অন্য জেলাগুলিতেও যেখানে শাখা কম, সেখানে অবিলম্বে নতুন শাখা খোলার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এ বছর বিজয়া দশমীতে শতবর্ষে পা দিচ্ছে আরএসএস। এই উপলক্ষ্যে দেশজুড়ে বিশেষ প্রচারাভিযান চলবে। প্রচারের মূল উদ্দেশ্য গত একশো বছরে সঙ্ঘ কীভাবে নানা বাধা কাটিয়ে এগিয়েছে এবং দেশ গঠনের কাজে যুক্ত থেকেছে, সেই ইতিহাস জনসাধারণের সামনে তুলে ধরা। সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত ইতিমধ্যেই দিল্লির এক সভায় সংগঠনের দর্শন ব্যাখ্যা করেছেন। এবার বাংলায় আসার পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁর। শোনা যাচ্ছে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আয়োজিত বিশেষ সম্মেলনে সরাসরি যোগ দেবেন তিনি।
আগামী মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হবে রাজ্যজুড়ে সঙ্ঘের প্রচারাভিযান। কর্মসূচির মধ্যে থাকছে ‘নাগরিক সম্মেলন’ ও ‘গৃহ সম্পর্ক অভিযান’। অর্থাৎ, স্থানীয় স্তরে প্রচারকরা পাড়ায় পাড়ায়, বাড়ি বাড়ি গিয়ে সঙ্ঘের মতাদর্শ ছড়িয়ে দেবেন। পাশাপাশি পথে নেমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
সূত্রের খবর, আগামী জানুয়ারিতে আলাদা করে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গে ‘হিন্দু সম্মেলন’-এর আয়োজন হবে। তাতে সঙ্ঘের সর্বভারতীয় স্তরের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এই সম্মেলনগুলির মাধ্যমে সংগঠনের বার্তা যেমন ছড়াবে, তেমনই ভোটের আগে বিজেপির জন্য শক্ত ভিত গড়ে দেবে আরএসএস। বাংলার রাজনীতিতে তৃণমূল ও বিজেপির সংঘাতের মধ্যে সঙ্ঘের এই উদ্যোগ নতুন মাত্রা যোগ করবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সংগঠন সূত্রে আরও দাবি, এই পরিকল্পিত কর্মসূচির ফলে ভোটের আগে সঙ্ঘের প্রভাব বিস্তার অনেকটাই দৃশ্যমান হয়ে উঠবে।