আলিপুরদুয়ার জেলায় গুরুতর অভিযোগ উঠল জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বিনা নোটিসে অর্ধশতাব্দী পুরনো প্রাথমিক বিদ্যালয় ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠল। শনিবার সন্ধ্যায় আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের সোনাপুর চৌপথি সংলগ্ন চকচকা সূর্য সেন বিদ্যাপীঠ গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় মানুষজনের পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
আরও পড়ুন: বেআইনিভাবে নির্মাণ, নিউ টাউনে ২৬ তলা টাওয়ার ভাঙার নির্দেশ হাইকোর্টের
সূত্রের খবর, প্রায় ৫২ বছর ধরে রাজ্য সরকারের ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত এলাকার বহু ছাত্রছাত্রী। স্কুল সংলগ্ন অংশ দিয়ে জাতীয় সড়ক যাওয়ায় কিছুদিন ধরে সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ চলছিল। অভিযোগ, সেই কাজের অজুহাতে কর্তৃপক্ষ কোনও লিখিত নোটিস ছাড়াই স্কুল ভেঙে ফেলে। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয় ভাঙার পর ভাঙা ইট-পাথর ও সামগ্রী লুটপাট চলতে থাকে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লুটপাট বন্ধ করে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উত্তমকুমার দাস জানিয়েছেন, একটিও নোটিস দেওয়া হয়নি। হঠাৎ এসে পুরো স্কুল ভেঙে ফেলে দেওয়া হল। পরে জানতে পারেন, বইপত্র থেকে শুরু করে সামগ্রী লুট হচ্ছে। সোমবার থেকে ছাত্রছাত্রীদের কোথায় পড়ানো হবে, তা নিয়ে প্রবল দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে।
এই ঘটনার পর থেকেই এলাকায় প্রশ্ন উঠেছে, স্কুলের জমি কি আদৌ জাতীয় সড়কের আওতায় পড়ে? যদি না পড়ে, তবে কেন এমন তড়িঘড়ি পদক্ষেপ? নোটিসই বা কেন দেওয়া হলো না। ক্ষুব্ধ অভিভাবকরাও প্রশ্ন তুলেছেন, এভাবে রাতারাতি স্কুল উচ্ছেদ হলে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ কোথায় দাঁড়াবে।
এদিকে, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার দায় নিতে চাইছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, ঘটনার বিষয়ে কোনও তথ্য তাঁদের কাছে নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোরও তীব্র হয়েছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি প্রকাশ সিং বরাইক বলেছেন, রাস্তা প্রশস্ত হওয়া জরুরি। কিন্তু কোনও নোটিস না দিয়ে স্কুল ভাঙা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপি সভাপতি রূপন দাসের বক্তব্য, প্রশাসন আগেই স্কুলটিকে অন্যত্র সরিয়ে নিলে আজ এই পরিস্থিতি তৈরি হত না। যা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।