দুর্গাপুজো সামনে, বাঙালির ভ্রমণ তালিকায় প্রতিবছরই নেপালের নাম থাকে সবার আগে। কিন্তু, এবারের চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। কারণ নেপাল এখন অস্থির। সেখানে অশান্তি ও হিংসার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পর্যটকরা একের পর এক বুকিং বাতিল করছেন। এতে কয়েক হাজার কোটি টাকার লোকসানের মুখে পড়েছে নেপালের পর্যটন শিল্প।
আরও পড়ুন: নেপাল নিয়ে তথ্য সংগ্রহ রাজ্য গোয়েন্দাদের, দিল্লিতে রিপোর্ট পাঠাচ্ছেন DGP
নেপাল ট্যুরিজম বোর্ড ও ইমিগ্রেশন দফতরের তথ্য অনুযায়ী, অগস্ট মাস পর্যন্ত দেশটিতে ভ্রমণ করেছেন ৮৮,৬৮০ জন বিদেশি পর্যটক। এর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির পর্যটকের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি শুধু ভারত থেকেই গিয়েছিলেন ৩৫,৫০৫ জন। কিন্তু, সেপ্টেম্বরের অশান্তি সেই প্রবাহকে থামিয়ে দিয়েছে। কলকাতা-সহ বাংলার পর্যটন সংস্থাগুলির দাবি, গত এক সপ্তাহে হাজার হাজার বুকিং বাতিল হয়েছে।
নেপালের ‘দ্য হিমালয়ান টাইমস’-এর খবর অনুযায়ী, অশান্তিতে অন্তত ২৪টি হোটেলে ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। কাঠমান্ডুর হিলটন হোটেল, পোখারা, বিরাটনগর ও ভৈরহাওয়া-সহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আটকে পড়া বহু পর্যটক সেখান থেকে আতঙ্কে দেশে ফিরেছেন। এর জেরেই দুর্গাপুজোর মরশুমে ভ্রমণ পরিকল্পনা বদলে ফেলছেন ভারতীয় পর্যটকেরা।
হোটেল ও পরিবহণ খাতের ব্যবসায়ীদের হিসাব অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি লোকসানের মুখে পড়েছে দেশটি। পর্যটন খাত নেপালের জিডিপির প্রায় ১৫ শতাংশ জুড়ে রয়েছে। ট্রেকিং, পশুপতিনাথ মন্দির দর্শন, লুম্বিনী-বুদ্ধগয়া সার্কিট এসবের উপর নির্ভর করে হাজার হাজার মানুষের জীবিকা। আতঙ্ক কাটতে দেরি হলে সেই জীবিকা মারাত্মক বিপদের মুখে পড়বে। হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের তরফে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। যাতায়াতে সমস্যা, পর্যটনকেন্দ্রে অশান্তি এই অবস্থায় কেউই যেতে চাইছে না। বুকিং বাতিল হচ্ছে একের পর এক। রাজ্য ইকো ট্যুরিজম কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থার কথায়, বাংলার অসংখ্য পর্যটকের প্রথম পছন্দ নেপাল। কিন্তু এই আতঙ্ক কাটতে না পারলে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হবে। নেপাল দ্রুত স্বাভাবিক না হলে তাদের পর্যটন শিল্প ভেঙে পড়তে পারে।