একদিকে যেখানে এশিয়া কাপে ‘নো হ্যান্ডশেক’ ইস্যুতে ভারত-পাক দ্বন্দ্ব চরমে উঠছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার শাহিদ আফ্রিদির মুখের বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর প্রশংসাকে ঘিরে জাতীয় রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। আফ্রিদির মন্তব্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে বিজেপি।
একটি পাকিস্তানি সংবাদ চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাহিদ আফ্রিদি ভারতের ক্ষমতাসীন এনডিএ সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি ‘হিন্দু-মুসলিম কার্ড’ ব্যবহার করে ক্ষমতায় আসে, যা একটি ‘অত্যন্ত বাজে মানসিকতা।' আফ্রিদির মতে, এই ধরনের বিভাজনের রাজনীতি ততদিন চলবে, যতদিন বিজেপি ক্ষমতায় থাকবে। ভারত সরকারকে ইজরায়েলের সঙ্গেও তুলনা করেন তিনি। এর বিপরীতে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সম্পর্কে তিনি এক ভিন্ন চিত্র তুলে ধরেন। আফ্রিদি বলেন, রাহুলের মানসিকতা ইতিবাচক এবং তিনি পাকিস্তানের সঙ্গেও আলোচনা শুরু করতে আগ্রহী। আফ্রিদির এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে হাত না মেলানোর ঘটনা নিয়ে বিতর্ক চলছে।
বিজেপির কড়া প্রতিক্রিয়া এবং বিরোধীরা
শাহিদ আফ্রিদির মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই রাহুল গান্ধীর সমালোচনায় সরব হয় বিজেপি। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেছেন, রাহুল গান্ধী হলেন পাকিস্তানের ডার্লিং। রাহুল গান্ধীকে পাকিস্তানের লোকজন তাঁদের নেতা করতে পারেন। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য বলেন, ভারতের শত্রুরা রাহুল গান্ধীর হয়ে প্রশংসায় গলা ফাটাচ্ছে। আর দেশের মানুষও জানেন যে, রাহুলের আনুগত্য কোন দেশের জন্য রয়েছে। কট্টর হিন্দুবিদ্বেষী শাহিদ আফ্রিদি বরাবরই ভারতের বিরুদ্ধে বিষ ঢেলে এসেছেন। তাঁর স্বপ্ন কাশ্মীর একদিন পাকিস্তানের হাতে আসবে। প্রতিটি ভারত বিরোধী কী করে রাহুল গান্ধীকে বন্ধু ঠাউরে ফেলে! রাহুলের উদ্দেশে অমিত মালব্য বলেছেন, 'তাই বলে জেনে রাখবেন দেশের প্রতিটি মানুষ কিন্তু আপনাকে চেনে, আপনি কোন দেশের প্রতি অনুগত।'
বিজেপিকে পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি কংগ্রেস। আফ্রিদির সঙ্গে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের একটি ছবি শেয়ার করেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনেত।সেই সঙ্গে এক্স বার্তায় তিনি লিখেছেন, 'আপনি মিষ্টি কথা বলছেন...আপনি বন্ধুত্ব বজায় রাখছেন, আর আপনিই আমাদেরকে প্রশ্ন করছেন?' সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর ও পাকিস্তানের প্রাক্তন তারকা আফ্রিদি একসঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন । ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই নেটিজেনরা প্রশ্ন তোলেন, যখন সীমান্ত উত্তেজনা আর জনমানসে ক্ষোভ তুঙ্গে, তখন সরকারি মহল কীভাবে এত বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করছে? পরে জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের একটি পুরানো ভিডিও। অন্যদিকে, কংগ্রেসের আইনজীবী-সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ভারতের সঙ্গে আফ্রিদির সমস্যা তাঁর রহস্যময় বয়সের রেকর্ডের চেয়েও গভীর। কংগ্রেস নেতার কথায়, 'এখন যেহেতু তাঁর জামাই ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কাছে পরাজিত হিচ্ছে, তাই ভারত-বিরোধী ক্ষোভ আগের চেয়েও তীব্রতর হচ্ছে।'