গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সকে (এনডিএ) শক্তিশালী করার কাজে আরও বেশি মন দেয় ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। এর আগে মোদীর প্রথম দুই সরকারে বিজেপি একাই সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। এই আবহে শরিকদের 'অবহেলা' করার অভিযোগ উঠত তাদের বিরুদ্ধে। এই সময়কালে অনেক শরিকও হারিয়েছে বিজেপি। তবে ২০২৪ সালের ভোটে একক বৃহত্তম দল হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে বেশ কয়েকটি আসন কম পেয়েছে বিজেপি। এই আবহে এই সরকারে ছোট ছোট পার্টিরও 'খেয়াল' রাখতে হচ্ছে তাদের। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন রাজ্যে শরিকদের চাপের মুখে পড়েছে গেরুয়া শিবির।
বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে 'হ্যাম' সোচ্চার হয়েছে। এদিকে উত্তরপ্রদেশে নিশাদ পার্টি, সুভাষপ, আপনা দল এবং আরএলডি তাদের নিজস্ব উপায়ে চাপ বাড়িয়ে তুলছে বিজেপির ওপর। তামিলনাড়ুতেও এআইএডিএমকে-র বিভিন্ন অংশকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য বিজেপির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, এর জেরে এআইএডিএমকে-র বিরোধিতার মুখেও পড়েছে তারা। বিধানসভা নির্বাচন হোক বা লোকসভা নির্বাচন, জোটের রাজনীতিতে আসন ভাগা নিয়ে দরকষাকষি হয়। কিন্তু কার্যকালের মাঝে শরিকা চাপ বাড়াতে শুরু করলে তা অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে। মোদী জমানায় ২০১৪ সাল থেকে দশ বছর ধরে বিজেপি তাদের শরিকদের উপর আধিপত্য বিস্তার করেছিল। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পরে পরিস্থিতি পরিবর্তন হতে শুরু করে। এর ফলে বিজেপি দলের চেয়ে জোটকে শক্তিশালী করার উপর বেশি জোর দিচ্ছে এখন। সংসদের ভিতরে এবং বাইরে জোটকে এগিয়ে রেখেছে তারা। তবে এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে বিজেপির ওপর চাপ বাড়তে শুরু করেছে তাদের শরিকরা।
বিহার বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রকাশ্যে এসেছে হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার জিতন রাম মাঝির 'চাপ'। জেডিইউও বিহারে নিজেকে বিজেপির 'দাদা' বলে দাবি করছে। লোকসভা আসনের অনুপাতে আসন চাইছে এলজেপি (রাম বিলাস)। এদিকে তামিলনাড়ুতে এআইএডিএমকের সাথে জোট বেঁধেছে বিজেপি। জয়ললিতার মৃত্যুর পর সেই দলে বিভাজন হয়। সেই এআইএডিএমকেকে একজোট করার চেষ্টা করছে বিজেপি। আগামী বছর তামিলমনাড়ুতে বিধানসভা নির্বাচন। তাই ক্ষমতাসীন ডিএমকে-র জোটকে শক্তিশালী চ্যালেঞ্জ জানাতে জোটবদ্ধ এআইএডিএমকে চাইছে পদ্ম শিবির। তবে সেই দলের বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে এআইএডিএমকে নেতা ই পালানিস্বামী বিজেপির মধ্যস্থতা মেনে নিতে রাজি নন। উত্তরপ্রদেশেও বিজেপির শরিক নিশাদ পার্টি সোচ্চার হতে শুরু করেছে। সম্প্রতি সুভাষপ, আপনা দল ও আরএলডির নেতারা দিল্লিতে নিশাদ পার্টির মঞ্চে জড়ো হয়েছেন এবং তাঁরা নিজেদের সামাজিক অবস্থা অনুযায়ী আরও বেশি 'ভাগ' দাবি করেছেন। যদিও উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন ২০২৭ সালে। তবে বিজেপির শরিকরা আগে থেকেই দর কষাকষি শুরু করে দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।