ডিজিটাল যুগে শপিং মলে গিয়ে জামাকাপড় বা ইলেক্ট্রনিক জিনিস কেনার চল কমছে। বাড়িতে বসেই কয়েক ক্লিকে আকর্ষণীয় ডিসকাউন্টে জিনিস অর্ডার করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন নেটিজেনরা। কিন্তু করোনাকালে ই-কমার্সের প্রসারের পাশাপাশি প্রতারণার ঘটনাও আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গিয়েছে। অনলাইন লেনদেন নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত নেটিজেনদের কাছে ক্যাশ-অন-ডেলিভারি (সিওডি) একটি অন্যতম বিকল্প। কিন্তু সম্প্রতি ত্বিশা তুলি নামে একজন সোশাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার এমন একটি সিওডি স্ক্যাম সামনে এনেছেন, যার জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
দিন দিন অনলাইন শপিংয়ের পরিসর বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সাইবার জালিয়াতির ঘটনাও বাড়ছে। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে ত্বিশা তুলি গোটা দেশবাসীকে সিওডি স্ক্যাম সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর ধরে ক্যাশ অন ডেলিভারির মাধ্যমে বহু জালিয়াতির ঘটনা হচ্ছে। এক ভিডিও বার্তায় ত্বিশা তুলি বলেন, এই ক্যাশ অন ডেলিভারি জালিয়াতি দিল্লিভেরি, ব্লু ডার্ট, ইকম এক্সপ্রেস এবং শ্যাডোফ্যাক্সের মতো বিখ্যাত কুরিয়ার কোম্পানিগুলির নামে করা হচ্ছে এবং এগুলি এখন সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করছে। সিওডি স্ক্যাম ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি জানান, প্রতারকরা দিল্লিভেরি, ব্লু ডার্ট, ইকম এক্সপ্রেস এবং শ্যাডোফ্যাক্সের মতো কুরিয়ার কোম্পানির নাম ব্যবহার করে গ্রাহকদের কাছে পার্সেল সরবরাহ পাঠিয়ে টাকা আদায় করছে। তবে, সাইবার অপরাধীরা এই ধরণের জালিয়াতি করার জন্য খুব কম সংখক মানুষকে টার্গেট করে।
এই প্রসঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ত্বিশা তুলি বলেন, সম্পত্তি তাঁর পরিবারের একজন সদস্যের নামে একটি পার্সেল এসেছিল। কিন্তু যখন পরিবারের ওই সদস্যরা বুঝতে পারেন যে পার্সেলটি তিনি অর্ডার করেননি, তখন তারা সেটিকে ফেরত পাঠিয়ে দেন। তার কয়েকদিন পর তাঁদের পরিবারের অন্য এক সদস্যের নামে বাড়িতে আরেকটি পার্সেল আসে। তিনি মনে করেন যে এটি তাঁরই পার্সেল।এরপর তিনি ডেলিভারি বয়কে ৭০০ টাকা দেন। তারপর তিনি পার্সেলটি খুলে দেখেন, সেখানে চিনা ভাষায় লেখা একটি জিনিস রয়েছে। পাশাপাশি পার্সেলটিতে একটি কিউআর কোডও ছিল। কিন্তু তা কাজ করছিল না। এরপরেই জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। কিন্তু ততক্ষণে ভুক্তভোগী তার টাকা হারিয়ে ফেলেছিলেন। ত্বিশা তুলি এই ভিডিওতে ব্যাখ্যা করেছেন যে এই ধরণের প্রতারণার ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। তিনি বলেন, সাইবার অপরাধীরা শিশু, বৃদ্ধ সকলকেই লুট করছে। এমনকী অনলাইন শপিংয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিরাও সহজেই এই প্রতারণার শিকার হতে পারেন। তাঁর কথায়, 'যেহেতু পার্সেলটি একটি নির্ভরযোগ্য কুরিয়ার কোম্পানি থেকে পাঠানো হয়েছিল, তাই আমরা এটিকে আসল বলে মনে করি এবং টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়।'
প্রতারণা এড়াতে টিপস
যদি আপনি কোন পার্সেল পান, তাহলে পেমেন্ট করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আসলে সেটি অর্ডার করেছেন কিনা।
নিজেকে এবং আপনার পরিবারের সদস্যদের বলুন যে শুধুমাত্র পার্সেলে নাম থাকার কারণে এটিকে সত্য বলে বিশ্বাস করবেন না।
যদি কোনও সন্দেহজনক অর্ডার ডেলিভারি করা হয়, তাহলে অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার কোম্পানিকে জানান।