মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতে চলেছে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। প্রসঙ্গত, মার্কিন কর্মকর্তারা বিগত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রমাগত ভারতের সমালোচনা করে আসছিলেন। এই আবহে ফের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মেরামতের পথ খুলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত নিয়ে 'সুর নরম' করায় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সাফল্যের আশা বেড়েছে। এদিকে জানা গিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচনা দলের প্রধান হলেন ব্রেন্ডন লিঞ্চ। গতকাল রাতেই তিনি নয়াদিল্লিতে এসে পৌঁছন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ সফরে ছিলেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে প্রধান মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, বৈঠকে লিঞ্চকে ইউনুস বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত। এভাবেই বাংলাদেশের ওপর আরোপ হওয়া মার্কিন শুল্ক কম হবে বলে আশা করছে ইউনুস সকার। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যঘাটতি কমানোর কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ নাকি এরপর থেকে আমেরিকা থেকে সয়াবিন এবং তুলোর আমদানি বাড়াতে আগ্রহী। এ ছাড়া জ্বালানি খাতে সহযোগিতা জোরদার করতেও নাকি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইউনুস। উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশের পণ্য ওপর ২০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। মার্কিন শুল্ক ঘোষণার পর তা নিয়ে ভারতের সঙ্গে তুলনা করে ইঙ্গিতবহ পোস্ট দিয়েছিলেন ইউনুস।
এদিকে গত কয়েক মাসে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে তিক্ততা বেড়েছিল। ট্রাম্প কুকথা বলেই চলেছিলেন। এদিকে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, মোদী নাকি ৪ বার ট্রাম্পের ফোন তোলেননি। এরই মাঝে ট্রাম্প 'সুর বদল' করেন কিছুটা। এরপরই মোদী আশা প্রকাশ করেন যে, ভারত-মার্কিন বাণিজ্য আলোচনা যত শীঘ্র চূড়ান্ত হবে, তত ভালো। উল্লেখ্য, ভারতের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে কড়া অবস্থান নিয়ে চলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এক সপ্তাহ আগে তিনি ইউ-টার্ন নিলে সম্পর্ক ফের ইতিবাচক দিকে মোড় নেয়। তার আগে অবশ্য সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ট্রাম্প ভারতের উপর তীব্র আক্রমণ শুরু করেছিলেন। তাঁর ক্যাবিনেট সদস্য থেকে উপদেষ্টাও তীব্র ভাষায় ভারতকে তোপ দেগেছিলেন এবং মিথ্যাচার করছিলেন। এই আবহে ট্রাম্পের গতকালকের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ, কখনও তিনি বলেছিলেন যে আমেরিকা চিনের কাছে ভারত ও রাশিয়াকে হারিয়েছে, আবার কখনও তিনি ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে 'একতরফা' বলে বর্ণনা করেছেন। এর আগে ট্রাম্প আরও দাবি করেছিলেন যে ভারত শুল্ক শূন্যে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছে, তবে প্রস্তাবটি খুব দেরিতে এসেছে বলে ইঙ্গিত করেছিলেন তিনি। উভয় দেশের সাম্প্রতিক বিবৃতি অবশ্য ইঙ্গিত করছে যে দুই দেশই তাদের মতপার্থক্য নিরসন করতে এবং সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা চলছে।