ভারতের 'অপারেশন সিঁদুর' অভিযানে জইশ-ই-মহম্মদের (জেইএম) প্রধান মাসুদ আজহারের পরিবার ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। প্রথমবার নয়া দিল্লির দাবিকে স্বীকার করল পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন জইশ শীর্ষ কমান্ডার মাসুদ ইলিয়াস কাশ্মীরি। পহেলগাঁওয়ে নৃশংস হামলার পর পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে 'অপারেশন সিঁদুর' অভিয়ান চালিয়েছিল ভারতীয় সেনা। সেই হামলায় পাক মদতপুষ্ট বহু সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছিল। নিহত হয়েছিল শতাধিক জঙ্গি। নিহতদের মধ্যে ছিল মাসুদ আজহারের পরিবারের সদস্যরাও।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে, জইশ-ই-মহম্মদের কমান্ডার মাসুদ ইলিয়াস কাশ্মীরিকে ব্যাখ্যা করতে শোনা যাচ্ছে যে, ৭ মে কীভাবে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী তাদের আস্তানায় প্রবেশ করে আক্রমণ চালিয়েছিল। ভাইরাল ক্লিপে কাশ্মীরি উর্দুতে মাসুদ ইলিয়াস বলেছে, 'আমরা এই দেশের সীমান্ত রক্ষার জন্য দিল্লি, কাবুল এবং কান্দাহারের সঙ্গে লড়াই করেছি। সবকিছু ত্যাগ করার পর, ৭ মে, বাহাওয়ালপুরে ভারতীয় বাহিনী মৌলানা মাসুদ আজহারের পরিবারকে টুকরো টুকরো করে ফেলেছিল।' যদিও ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।
'অপারেশন সিঁদুর'
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের অভ্যন্তরে 'অপারেশন সিঁদুর' অভিযান চালিয়ে নয়'টি সন্ত্রাসবাদী শিবির ধ্বংস করে দেয়। সেই আক্রমণে রাতভর বিমান হামলা চলেছিল। এই অভিযানের সময় জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম) এবং লস্কর-ই-তৈবা (এলইটি)-র ঘাঁটিও লক্ষ্য করা হয়েছিল। পাকিস্তান পরে স্বীকার করেছে যে, এই হামলায় তাদের নয়'টি স্থানে আঘাত করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বাহাওয়ালপুর, কোটলি এবং মুরিদকে। এগুলি সবকটাই উগ্রপন্থী কার্যকলাপের পরিচিত কেন্দ্রস্থল।পাকিস্তানের দ্বাদশ বৃহত্তম শহর বাহাওয়ালপুরকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছিল, কারণ সেটি জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। লাহোর থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, জামিয়া মসজিদ সুবহানআল্লাহ-ই জইশ-ই-মহম্মদের অপারেশনাল সদর দফতর, যা উসমান-ও-আলী ক্যাম্পাস নামেও পরিচিত।
এই ঘটনার পর মাসুদের যে প্রতিক্রিয়া একাধিক সংবাদমাধ্যমে আসে, সেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, 'আমার পরিবারের সদস্যরা আল্লার আশীর্বাদধন্য হয়েছে। পাঁচজন নিষ্পাপ শিশু, আমার বড় বোন, তার স্বামী। আমার ভাগ্নে এবং তার স্ত্রী, আমার ভাইপো। আমার প্রিয় ভাই (জ্ঞাতি) হুজাইফা এবং তার মা। আরও দু’জন প্রিয় সঙ্গী।' বাস্তবে বিধ্বস্ত হলেও স্বভাব মতো মুখে সেকথা আনেনি কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী। এবার জইশ শীর্ষ কমান্ডারের মুখেও শোনা গেল কীভাবে ভারতীয় সেনার দুরন্ত আক্রমণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর।