হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা পিটার নাভারো বিগত কয়েক সপ্তাহে একাধিকবার ভারত এবং মোদীকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন। তবে গত কয়েকদিন ধরে তিনি তুলনামূলক ভাবে শান্ত ছিলেন। এদিকে বাণিজ্য আলোচনা চলাকালীন ট্রাম্পও সুর বদলেছেন। তবে ফের একবার নাভারো মুখ খুললেন মোদীকে নিয়ে। এই আবহে ভারতের প্রাক্তন বিদেশ সচিব পালটা আয়না দেখিয়েছেন নাভারোকে। এর আগে নাভারো একদিন আগেই দাবি করেন, ব্রিকস মঞ্চে চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে স্বস্তি বোধ করছিলেন না মোদী। এর জবাবে ভারতের প্রাক্তন বিদেশ সচিব কানওয়াল সিব্বল বলেন, ভারত ও চিনের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়ে নাভারোর সম্পূর্ণ জ্ঞান নেই।
সম্প্রতি নাভারো এক মার্কিন সংবাদ চ্যানেলে দাবি করেছিলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চিনা নেতাদের সঙ্গে একই মঞ্চে দাঁড়াতে অস্বস্তি বোধ করছেন। জবাবে ভারতের প্রাক্তন বিদেশ সচিব কানওয়াল সিব্বল সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে লিখেছেন, 'আমি জানতাম না যে নাভারো দূর থেকে মন পড়তে পারে। ভারত ও চিনের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সম্পর্কের বিষয়ে তিনি পুরোপুরি অবগত নন। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে মোদী শি জিনপিংয়ের সাথে ১৮ বার দেখা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে দ্বিপাক্ষিক সফর এবং আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। মোদী নিজে ৫ বার চিন সফর করেছেন এবং শি দু'বার ভারত সফর করেছেন। দুই নেতার মধ্যে দুটি অনানুষ্ঠানিক শীর্ষ বৈঠক হয়েছে সাম্প্রতিককালে। ব্রিকস শিখর সম্মেলনে কাজানে দুই নেতার বৈঠক হয়েছিল। এরপর এসসিও-র বৈঠকের ফাঁকে ফের আলোচনা হয় দু'জনের। আমরা জানি চীনের সাথে আমাদের সমস্যাগুলি কী এবং আমরা জানি কীভাবে সেগুলি পরিচালনা করতে হয়। আমাদের সেনারা এখনও লাদাখে লড়াই করছে।'
এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চিন সফর প্রসঙ্গে নাভারো বলেছিলেন, 'আমার মনে হয় না মোদী চিনের সঙ্গে একই মঞ্চে দাঁড়াতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।' তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও ভারতের কর্মপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। এর আগেও তিনি ভারতকে মুনাফাখোর বলে অভিহিত করেছেন এবং রাশিয়ার তেল কেনায় ভারতকে নিশানা করেছেন। গত সপ্তাহে নাভারো দাবি করেছিলেন, ব্রিকস বেশিদিন টিকবে না। তিনি বলেছিলেন, 'আমি বুঝতে পারছি না কীভাবে ব্রিকস জোট ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারে, কারণ ঐতিহাসিকভাবে তারা সবাই একে অপরকে ঘৃণা করে এবং একে অপরকে খতম করতে চায়।' ব্রিকস মূলত ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে গঠিত হয়েছিল। তবে ২০২৪ সালে মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ২০২৫ সালে ইন্দোনেশিয়াকে এই জোটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।