পাঁশকুড়ার হাসপাতালে ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত ব্যক্তি কি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর ছেলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ? এই প্রশ্নেই এখন সরগরম রাজনৈতিক মহল। অভিযোগ উঠছে, প্রাক্তন জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রর ছেলে চিকিৎসক বোধিসত্ত্ব মহাপাত্রর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল অভিযুক্ত জাহির আব্বাস খানের। আর সেই ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়েই হাসপাতালে দাপট দেখাত এই জাহির। এদিকে এই বিষয়ে বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র দাবি করেছেন, তাঁর ছেলে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ছিলেন। তাঁর সঙ্গে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের কোনও সম্পর্ক নেই। এই আবহে জাহিরের সঙ্গে বোধিসত্ত্বের সম্পর্ক থাকার প্রশ্ন ওঠে না বলে দাবি প্রাক্তন মন্ত্রীর।
উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো এই ধর্ষণের অভিযোগ সামনে আসে। তমলুক থানার অন্তর্গত এক তরুণী বেসরকারি সংস্থার অধীনে ওয়ার্ড গার্ল হিসেবে কাজ করতেন সেই হাসপাতালে। তাঁর অভিযোগ, ওই কোম্পানির ফেসিলিটি ম্যানেজার হাসপাতালের ভিতরেই একাধিকবার তাঁকে ধর্ষণ করে। এই ফেসিলিটি ম্যানেজারের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর পাশাপাশি একাধিক মহলা কর্মীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে।
পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্ত শেখ জাহির আব্বাস খান একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে ওই হাসপাতালে কাজ করছিল। ১৪ সেপ্টেম্বর সে এক মহিলা সহকর্মীকে নানা অজুহাতে নিজের কাছে ডেকে নেয়। অভিযোগ, কাজ থেকে বরখাস্ত করার ভয় দেখিয়ে হাসপাতালে ভেতরেই শারীরিক নির্যাতন চালায় সে। কাউকে কিছু জানালে আরও বড় ক্ষতি করে দেওয়ার হুমকি দেয় আব্বাস। দীর্ঘদিন বিষয়টি গোপন রাখা হলেও সোমবার ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসে। সোমবার পাঁশকুড়া থানায় ওই তরুণী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, জেলা তৃণমূল সভাপতি, পৌরসভার চেয়ারপার্সন হাসপাতালে যান। এদিকে তিলোত্তমা মঞ্চের ৮ সদস্যের এক প্রতিনিধি দলও সেখানে যায়। এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার বলেন, 'নির্যাতিতা আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। এখন সবাই জেনে গিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে যা চলছে, তাতে আমাদের কাছে অভিযোগ জানিয়ে কেস না করলে কোনও বিচার হয় না। চলতি সপ্তাহেই আমরা পাঁশকুড়া যাচ্ছি। মহালয়ার আগেই যাচ্ছি।'