প্রায় এক দশক আগে রাজ্যে চালু হয়েছিল সবুজসাথী প্রকল্প। দূরদূরান্তে পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছতে সুবিধা করে দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শুরু হওয়া এই প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ৩৮ লক্ষের বেশি সাইকেল বিলি হয়েছে। খরচ হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। কিন্তু সাম্প্রতিক ছবি প্রশাসনিক মহলে নতুন অস্বস্তি তৈরি করেছে। বিভিন্ন জেলায় হাজার হাজার সাইকেল এখনও খোলা আকাশের নীচে পড়ে রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই সেগুলি স্কুলপড়ুয়াদের হাতে পৌঁছনোর আগেই বৃষ্টির জলে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বর্ষার মাঝেই সেই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে নবান্ন।
আরও পড়ুন: কন্যাশ্রী দিবসে মুখ্যমন্ত্রীর বড় ঘোষণা, আরও ১২ লক্ষ পড়ুয়া পাবে সবুজ সাথীর সাইকেল
সূত্রের খবর, রাজ্যের তরফে জেলা শাসকদের কাছে সুস্পষ্ট নির্দেশ গিয়েছে, এই মুহূর্তে সাইকেলগুলিকে দ্রুত সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে রাখতে হবে। নির্দেশ অনুযায়ী, প্রতিটি জেলার ডিএম অফিসের নির্দিষ্ট গুদামঘর বা নিরাপদ জায়গায় সাইকেল রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, কেন এত সাইকেল বিলি না হয়ে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে। অনগ্রসর শ্রেণির দফতরের সচিবকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রশাসনিক মহলের একাংশ জানাচ্ছে, সাধারণত সাইকেলগুলি স্কুলগুলির মাধ্যমে পড়ুয়াদের হাতে দেওয়া হয়। তবে জেলায় জেলায় কখনও সংরক্ষণের সমস্যা, কখনও বিতরণের ধীর গতির কারণে সাইকেল আটকে পড়ছে। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দফতরের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে চলতি বছরের অগস্টে এক্স হ্যান্ডেলে সবুজসাথী প্রকল্পের সাফল্যের কথা তুলে ধরেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ২০১৫-১৬ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে দশ দফায় ১ কোটি ৩৮ লক্ষাধিক সাইকেল বিলি করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে পড়ে থাকা সাইকেলের ছবি প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে। প্রশাসনিক মহলের বক্তব্য, এবার রিপোর্ট খতিয়ে দেখে দায়িত্বে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দ্রুত পড়ুয়াদের হাতে সাইকেল পৌঁছে দেওয়ার জন্য।