পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া হাসপাতালে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত জাহির আব্বাস খানের আগের কুকীর্তি সামনে এল এবার। জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে অষ্টম শ্রেণির এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল এই জাহিরের বিরুদ্ধে। সেই মামলায় ৩ মাস জেলও খাটতে হয়েছিল তাকে। এদিকে এই ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোর বেড়েছে। জানা গিয়েছে, হাসপাতালের কর্মীরাই চাঁদা তুলে একটা মোবাইল ফোন কিনেছিলেন। এরপর সেটির ভিডিয়ো রেকর্ডিং চালু করে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল জাহির আব্বাসের ১৫৭ নম্বর ঘরে। রিপোর্টের দাবি, সেই ফোনেই ধর্ষণের অভিযোগের প্রমাণ রয়েছে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছিল, প্রাক্তন জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রর ছেলে চিকিৎসক বোধিসত্ত্ব মহাপাত্রর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল অভিযুক্ত জাহির আব্বাস খানের। আর সেই ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়েই হাসপাতালে দাপট দেখাত এই জাহির। যদিও তৃণমূল বিধায়ক এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এদিকে আদালতে পেশ করা হলে জাহিরকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে হাসপাতালের অন্য কর্মীরা নাম প্রকাশ না করেই অভিযোগ করেছেন, জাহির আব্বাস তাদের ওপর প্রভাব খাটাত। এদিকে হুমকি দিত, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালে কাজ থেকে বের করে দেওয়ার। এই আবহে তার সব সহকর্মীরা ভয়ে ভয়ে থাকতেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো এই ধর্ষণের অভিযোগ সামনে আসে। তমলুক থানার অন্তর্গত এক তরুণী বেসরকারি সংস্থার অধীনে ওয়ার্ড গার্ল হিসেবে কাজ করতেন সেই হাসপাতালে। তাঁর অভিযোগ, ওই কোম্পানির ফেসিলিটি ম্যানেজার হাসপাতালের ভিতরেই একাধিকবার তাঁকে ধর্ষণ করে। এই ফেসিলিটি ম্যানেজারের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর পাশাপাশি একাধিক মহলা কর্মীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে।
পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্ত শেখ জাহির আব্বাস খান একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে ওই হাসপাতালে কাজ করছিল। ১৪ সেপ্টেম্বর সে এক মহিলা সহকর্মীকে নানা অজুহাতে নিজের কাছে ডেকে নেয়। অভিযোগ, কাজ থেকে বরখাস্ত করার ভয় দেখিয়ে হাসপাতালে ভেতরেই শারীরিক নির্যাতন চালায় সে। কাউকে কিছু জানালে আরও বড় ক্ষতি করে দেওয়ার হুমকি দেয় আব্বাস। দীর্ঘদিন বিষয়টি গোপন রাখা হলেও সোমবার ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসে। সোমবার পাঁশকুড়া থানায় ওই তরুণী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।