বালুরঘাটের বাসিন্দা এবং আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী অনিন্দিতা সোরেনের মৃত্যু ঘিরে রহস্য ক্রমশ জটিল হচ্ছে। পুলিশি জেরায় মৃতার প্রেমিক উজ্জ্বল সোরেন দাবি করেছেন, অনিন্দিতার জীবনে আরও একজন যুবক ছিলেন, বাঁকুড়ার এক ডাক্তারি পড়ুয়া। সেই সম্পর্ক নিয়েই সমস্যার সূত্রপাত হয়েছিল বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: আরজি করের ডাক্তারি ছাত্রীর মৃত্যু মামলায় আটক 'বন্ধু', হয়েছে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত
গত দুই দিন ধরে মালদা পুলিশ টানা জেরা করেছে উজ্জ্বলকে। তদন্তকারীরা প্রশ্ন করেন, অনিন্দিতার গর্ভপাতের পর কেন রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়নি? সেই প্রশ্নের উত্তরে উজ্জ্বল জানান, অনিন্দিতাই নাকি রেজিস্ট্রিতে রাজি ছিলেন না। তাঁর কথায়, ওর জীবনে অন্য একজন ছিল। সেই কারণেই ও বিয়ে করতে চায়নি। শুধু তাই নয়, উজ্জ্বলের আরও দাবি, ঘটনার দিন হোটেলে তাঁর সামনেই অনিন্দিতা একসঙ্গে ১৮টি ট্যাবলেট খেয়ে ফেলেন। তাঁকে থামাতে গেলে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। এরপরেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়।
এদিকে, তদন্ত চলাকালীন রাজ্য পুলিশের তরফে হঠাৎই ইংরেজবাজার থানার আইসি সঞ্জয় ঘোষকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে সদর দফতরের নির্দেশে তাঁকে ‘ক্লোজ’ করে ভবানী ভবনে রিজার্ভে থাকতে বলা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে ইতিমধ্যেই মালদার পুলিশ মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষ এখনই এই নির্দেশের সঙ্গে ডাক্তারি ছাত্রীর মৃত্যুরহস্যের যোগ আছে কি না, তা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না।
প্রসঙ্গত, অনিন্দিতার অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর থেকেই তাঁর প্রেমিক উজ্জ্বলকে ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠছিল। পরিবারের তরফে অভিযোগ আনা হলেও, পুলিশের হাতে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট প্রমাণ আসেনি। তবে তদন্তকারীদের মতে, উজ্জ্বলের বয়ানে উঠে আসা ত্রিকোণ সম্পর্কের ইঙ্গিত মামলার গতিপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। ছাত্রীর হঠাৎ মৃত্যু, প্রেমিকের দাবি, অন্য সম্পর্কের অভিযোগ, পুলিশের ভেতরের অদলবদল এইসবের ফলে এই ঘটনাকে ঘিরে রহস্য আরও গভীর হচ্ছে।