আরজি কর হাসপাতালের মহিলা ডাক্তারি ছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে রহস্য ঘনীভূত। এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের তরফ থেকে আটক করা হল নিহত অনিন্দিতা সোরেনের এক 'বন্ধুকে'। অভিযুক্ত মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডাক্তারির পড়ুয়া উজ্জ্বল সোরেন। জানা যায়, গত সোমবার উজ্জ্বলের সঙ্গে দেখা করতে মালদায় গিয়েছিলেন অনিন্দিতা। সেখানে এক হোটেলে ছিলেন তাঁরা। সেই সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন অনিন্দিতা। তাঁকে মালদা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে গত ১২ সেপ্টেম্বর কলকাতায় নিয়ে আসার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এই আবহে ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে অনিন্দিতাকে।
নিহত ছাত্রীর মা আলপনা টুডুর অভিযোগ, 'ওষুধ খাইয়ে মেরে দিয়েছে আমার মেয়েকে।' এদিকে তিনি জানিয়েছেন, অনিন্দিতার সঙ্গে উজ্জ্বলের প্রেম ছিল। এমনকী পুরীর মন্দিরে তাঁদের বিয়েও হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন তিনি। তবে উজ্জ্বল নাকি রেজিস্ট্রি করতে চায়নি। অনিন্দিতা তাঁকে বলেই মালদায় গিয়েছিলেন বলে জানান মা। এরই সঙ্গে নিহত ছাত্রীর মায়ের আরও বিস্ফোরক দাবি, 'আমার মেয়েকে জোর করে গর্ভপাত করায় উজ্জ্বল।' তারপরই নাকি তাঁদের সম্পর্কে তিক্ততা বেড়েছিল বলে দাবি করেন অনিন্দিতার মা। এদিকে অনিন্দিতার বাবা জোসেফ সোরেন জানান, অনিন্দিতা তাঁকে এই সম্পর্কের বিষয়ে কিছুই বলেননি। এদিকে অনিন্দিতার দাদা অনুপম সোরেনও জানান, তিনি উজ্জ্বলকে চিনতেন না। তবে অনিন্দিতার বাবা এবং দাদার, দুজনেরই বক্তব্য, দোষ করলে উজ্জ্বলের শাস্তি হোক।
এদি আপাতত উজ্জ্বলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। উজ্জ্বলের পুরুলিয়ায়। এদিকে অনিন্দিতা ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বাসিন্দা। বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দু’জনের পরিচয় হয়। অনিন্দিতার মা দাবি করেছেন, মালদায় থাকাকালীন তাঁর মেয়ে তাঁকে বলেছিলেন, 'আমার মনে হচ্ছে জোর করে ওরা ওষুধ খাইয়ে দিয়েছে।' এই আবহে ইংরেজ বাজার থানায় উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল অনিন্দিতার পরিবারের তরফ থেকে। তদন্তে নেমে মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে উজ্জ্বলকে আটক করে পুলিশ। এদিকে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়ে গিয়েছে। তবে রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। সেই রিপোর্ট সামনে এলে আরও স্পষ্ট ভাবে জানা যাবে, কী কারণে মৃত্যু হয় অনিন্দিতার।