রাজ্য সরকারের ছুটির বিজ্ঞপ্তি অগ্রাহ্য করে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখার সিদ্ধান্তে ফের বিতর্কে জড়ালেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত দে। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় নতুন করে ক্ষোভ ছড়িয়েছে শিক্ষক ও ছাত্রমহলে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক অস্বচ্ছ সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। ইতিমধ্যেই তৃণমূলপন্থী অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপা সরব হয়েছে এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা শুরু, তবে স্থগিত হল বর্ধমানের পরীক্ষা
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, শুধু বিশ্বকর্মা পুজোর ঘটনাই নয়, শান্তা দত্ত দে-র বিরুদ্ধে মোট ১৪টি গুরুতর অভিযোগের তালিকা প্রস্তুত করেছে ওয়েবকুপা। সেগুলির মধ্যে রয়েছে, রাজ্যপালকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা চালানোর জন্য কয়েক লক্ষ টাকা সাহায্য করা। এছাড়াও, দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই দ্বিতীয় সিন্ডিকেট বৈঠকে স্বামী ও রেলকর্মী জীবনকৃষ্ণ দে-কে বিশ্ববিদ্যালয়ের এথিক্স কমিটিতে স্থান দেওয়া। দুই বছর ধরে মানবাধিকারের কোর্সের রেজাল্ট আটকে রাখার ফল অন্তত ১৯ জন ছাত্রছাত্রী বিপাকে পড়েছেন। এসবের পাশাপাশি অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে অধ্যাপকদের ফি প্রদান এবং বেআইনি পদোন্নতির অভিযোগ, যার কারণে ফান্ড প্রায় শেষ হয়ে আসছে। রাজ্য সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের অনুদান অকেজো পড়ে থাকা, অপদক্ষতার জন্য ব্যবহার না হওয়া।সেইসঙ্গে, এনআইআরএফ র্যাঙ্কিংয়ে ধস।দাবি করা হচ্ছে, ২০১৯ সালে যেখানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল চতুর্থ, এখন নেমে এসেছে ১৬তম স্থানে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের টার্গেট করে এফআইআর করানোর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এছাড়াও, উচ্চশিক্ষা দফতরের অনুমোদন ছাড়াই সমাবর্তন আয়োজন, বহু আর্থিক সিদ্ধান্তে অনিয়ম, এমনকি ওবিসি ও এসসি ছাত্রছাত্রীদের গবেষণায় অযথা বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগ উঠছে।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকেও অভিযোগ উঠেছে, সম্প্রতি ২৮ অগস্ট সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসে আবেদন উড়িয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নেয়। আবার বিশ্বকর্মা পুজোর দিনই রাখা হয়েছিল স্নাতকোত্তর ভর্তি কাউন্সেলিং। ফলে ছাত্রছাত্রীদের একাংশ ক্ষুব্ধ। ওয়েবকুপা জানিয়েছে, এই ১৪ দফা অভিযোগের ভিত্তিতে তারা শিগগিরই আনুষ্ঠানিক তদন্তের দাবি জানাবে।