আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেন, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার ভোটার মুছে ফেলার কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের রক্ষা করছেন। তবে লোকসভার বিরোধী দলনেতার এই অভিযোগকে 'ভুল এবং ভিত্তিহীন' বলে খারিজ করে দিয়েছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। কড়া ভাষায় জবাবে নির্বাচন কমিশন বলেছে, 'রাহুল গান্ধীর করা অভিযোগ ভুল এবং ভিত্তিহীন। শ্রী রাহুল গান্ধীর ভুল ধারণা অনুযায়ী কোনও ভোট অনলাইনে বাদ দেওয়া যাবে না।' নির্বাচন কমিশন আরও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়া কোনও ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যাবে না। যার বিরুদ্ধে আবেদন করা হয়েছে, সেই ভোটারের বক্তব্য না শুনে কোনও নাম অপসারণ করা যাবে না।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুল গান্ধী বলেন, 'কিছু লোক' সারা ভারতে লক্ষ লক্ষ ভোটারের নাম তালিকা থেকে অপসারণের জন্য কাজ করছে। রাহুল গান্ধী বলেন, 'এই মঞ্চে এমন কিছু বলছি না যার ১০০ শতাংশ প্রমাণ নেই।' তবে পরে তিনি যোগ করেন যে হাইড্রোজেন বোমা এখনও আসেনি, তা পরে আসবে। রাহুল বলেন, 'এটা স্পষ্ট যে, নির্বাচন কমিশন গণতন্ত্র ধ্বংসকারীদের রক্ষা করছে।' এদিকে এর আগে রাহুল গান্ধীর পেশ করা ভোট চুরির 'প্রমাণ' পেশ করা প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন নিয়ে গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল। আগের সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুল গান্ধী যে প্রেজেন্টেশন দেখিয়েছিলেন, তা তিনি নিজের ওয়েবসাইটে আপলোড করেন। সেই ফাইলের মেটাডেটা দেখে জানা যায়, ফাইলগুলি মায়ানমারের টাইমজোনে বানানো। এই আবহে প্রশ্ন করা হয়, কংগ্রেস কি বাইরে থেকে এই ফাইল বানাচ্ছে বা বাইরের কেউ কংগ্রেসকে এই ফাইল দিচ্ছে। কংগ্রেস যদিও এই নিয়ে নানা দাবি করেছে, তবে বিজেপি এর সঙ্গে বিদেশি শক্তির হাত থাকতে পারে বলে দাবি করছে।
আজকে রাহুল গান্ধী কর্ণাটকের আলান্দ আসনের উদাহরণ দিয়ে দাবি করেছেন যে কেউ ৬০১৮টি ভোট মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল। তিনি বলেন, 'সেখানকার এক বুথস্তরের অফিসার দেখেন, তাঁর কাকার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, যে ব্যক্তি তাঁর কাকার নাম মোছার আবেদন জমা করে, তিনি তাঁদেরই প্রতিবেশী। ওই প্রতিবেশীর কাছে গেলে তিনি জানান, এই ব্যাপারে তিনি কিছু জানেনই না তিনি। তিনি কোনও আবেদনও পাঠাননি। তাই আড়াল থেকে অন্য শক্তি যে কাজ করছিল, এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কারণ, এমন আরও একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে একজনের নাম-পরিচয় ব্যবহার করে একসঙ্গে ১২ জন বা তার বেশি সংখ্যক ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জমা পড়ে।'
রাহুল জানিয়েছেন গোদাবাই নামের একজনের নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে ১২ জন ভোটারের নাম ডিলিট করা হয়। এরপর তিনি ভিডিয়ো কলে 'আসল' গোদাবাইকে সকলের সামনে পেশ করেন। সেই মহিলা দাবি করেন, তিনি এই সবের কিছুই জানেন না। এর পর সূর্যকান্ত নামের আর একজনের কথা তুলে ধরেন রাহুল। জানান, সূর্যকান্তের নামে লগ ইন করে মাত্র ১৪ মিনিটে ১২ জন ভোটারের নাম ডিলিট হয়। ভোটারদের নাম মোছার প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে রাহুল দাবি করেন, এই কাজে সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। রাহুল দাবি করেন, কর্ণাটক সিআইডি এই নিয়ে তদন্ত করছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে এই নিয়ে আবেদন জানালেও তারা নাকি তথ্য দিচ্ছে না। রাহুলের বক্তব্য, প্রতিটি নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জাানো হলে আবেদনকারীর কাছে ওটিপি চাওয়া হয়। সেই ওটিপির 'ট্রেল' চাওয়া হলেও নাকি কমিশন তা তদন্তকারীদের দিচ্ছে না। এই নিয়ে ১৮টি চিঠি নাকি কমিশকে দেওয়া হয়েছে।