পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে বুধবার একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তির অধীনে উভয় দেশের কারও একটির ওপর হামলা দুই দেশের ওপর হামলা হিসেবে বিবেচিত হবে। এই চুক্তি নিয়ে এবার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া দিল ভারত। ভারত বলেছে যে তারা সৌদি আরব এবং পাকিস্তানের মধ্যে কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তির 'প্রভাব' খতিয়ে দেখবে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ভারত সরকার এই চুক্তির বিষয়ে অবগত। তিনি বলেন, 'আমরা সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের খবর দেখেছি। দীর্ঘদিন ধরে যে এই দুই দেশের মধ্যে এমন একটি চুক্তি নিয়ে বিচার-আলোচনা চলছিল, সেই বিষয়ে সরকার সচেতন ছিল।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই চুক্তির ফলে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার ওপর কী প্রভাব পড়বে বা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর কী প্রভাব পড়বে, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখবে ভারত। উল্লেখ্য, পাকিস্তান এমন এক সময়ে এই চুক্তি করেছে, যখন ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন রয়েছে। জিও নিউজের খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের রিয়াদ সফরের সময় 'স্ট্র্যাটেজিক মিউচুয়াল ডিফেন্স অ্যাগ্রিমেন্ট' স্বাক্ষরিত হয়। আল-ইয়াম্মাহ প্যালেসে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মহম্মদ বিন সলমন তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন এই সফরে।
পাক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, উভয় দেশের বিরুদ্ধে যে কোনও আগ্রাসন উভয় দেশের ওপর হামলা হিসেবে বিবেচিত হবে এই দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, 'প্রায় আট দশক ধরে চলা একটি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এবং ভ্রাতৃত্ববোধ, ইসলামিক সংহতি এবং অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থে উভয় পক্ষ এই কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।' এই চুক্তির পর চর্চা চলছে, পাকিস্তানে তেল ও খনিজ উত্তোলনে সৌদি বিনিয়োগের বিষয়ে। সেই কারণেই এই প্রতিরক্ষা চুক্তি কি না, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি আবার ওআইসি-র সম্মেলনের ফাঁকে এক সাক্ষাৎকারে পাক বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার 'ইসলামিক ন্যাটো' তৈরির আভাস দিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, মুসলিম দেশগুলির সংগঠনের তরফ থেকে যৌথ ভাবে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে 'শান্তিপূর্ণ সামরিক জোট' গঠনের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। পাকিস্তান সেই জোটের অংশ নিতে রাজি বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। এরই মাঝে সৌদি আরবের থেকে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গ্যারান্টি পেল পাকিস্তান।