উত্তরাখণ্ডের চামোলিতে টানা বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। দেরাদুনের পরে এবার চামোলিতে দুর্যোগ ঘটল। আজ ভোররাত আড়াইটে নাগাদ চামোলি জেলায় নন্দানগর এলাকার ফালি কুঁত্রি, সান্তি কুঁত্রি, ভৈনসওয়ারা এবং ধুরমা গ্রামের উপরের মেঘ ভাঙা বৃষ্টি নেমে আসে। এর কারণে বিশাল ধ্বংসযজ্ঞ ঘটে এই গ্রামগুলিতে। প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, ধ্বংসস্তূপের নীচে অনেকে আটকে থাকতে পারেন। অন্তত ১২টি বাড়ি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। শুধুমাত্র কুন্ট্রি লাঙ্গাফালি ওয়ার্ডে ৬টি বাড়ি ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়েছে বলে জানা গেছে। দুর্ঘটনায়, অন্তত ৮ জন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে ২ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকিদের খোঁজে অভিযান চালানো হচ্ছে। অনেক জায়গায় বাড়িঘরের বিন্দুমাত্র চিহ্নও অবশিষ্ট নেই। মানুষ গৃহহীন হয়ে রাস্তায় নেমে এসেছেন।
জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এলাকার বেশিরভাগ রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ত্রাণ কাজ ব্যাহত হয়েছে। তহসিলদার রাকেশ দেওলি জানিয়েছেন, প্রশাসনের দলকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পাঠানো হয়েছে। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী দল নন্দপ্রয়াগে পৌঁছেছে। এনডিআরএফ দল গোচর থেকে নন্দপ্রয়াগের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর অফিস জানিয়েছে, একটি মেডিক্যাল টিম এবং তিনটি অ্যাম্বুলেন্সও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নন্দানগর তহসিলের ধুরমা গ্রামে ৪-৫টি বাড়িও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। একই সঙ্গে মোক্ষ নদীর জল হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, নদীর স্ফীতি, ধ্বংসস্তূপ ও ভাঙা রাস্তা। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সন্দীপ তিওয়ারি বলেছেন যে এখনও পর্যন্ত ১০-১২টি বাড়ি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি দোকানও। তিনি বলেন, 'আমরা জেসিবির সহায়তায় রাস্তা খোলার চেষ্টা করছি। আশা করা হচ্ছে যে ত্রাণ দলগুলি আগামী ৩০-৪৫ মিনিটের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলে পৌঁছাবে। ত্রাণ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে এবং লোকজনকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করা হবে।' উল্লেখ্য, মাত্র ১০ দিন আগে নন্দনগর এলাকায় মেঘ ভাঙার ঘটনা ঘটেছিল। এ বছর বর্ষায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির মধ্যে রয়েছে চামোলি জেলা।