দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে এসেছে ভারত বিরোধী পাক জঙ্গি সংগঠনগুলি। তবে এবার জইশ-ই-মহম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈয়বার নাম নিয়েই রাষ্ট্রসংঘে কড়া বার্তা দিল ভারত। তালিবানের তরফ থেকে পহেলগাঁও হামলার নিন্দা জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রসংঘে বিবৃতি দেন ভারতীয় দূত পর্বতনেনি হরিশ। তিনি বলেন, 'পহেলগাঁও জঙ্গি হালার তীব্র ভাষায় নিন্দা জানিয়েছে আফগান পক্ষ। আমরা তাদের এই বার্তাকে স্বাগত জানাই'।
এরই সঙ্গে রাষ্ট্রসংঘে ভারতীয় দূত বলেন, 'লস্কর-ই-তৈয়বা এবং জইশ-ই-মহম্মদের মতো তালিকাভুক্ত পাকিস্তানি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলির আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করা উচিত নয়। এবং যারা জঙ্গিদের কার্যকলাপকে আরও সহজ করে তুলছে, তাদেরও যেন আফগান মাটি ব্যবহার না করতে দেওয় হয়।' এদিকে নানা দুর্যোগের সময় আফগানিস্তানকে ভারত কতটা সাহায্য করেছে, তাও রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে তুলে ধরেন ভারতীয় দূত।
উল্লেখ্য, পহেলগাঁও হামলার পর ৭ মে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় সেনা। সেই সময় পাকিস্তান রটিয়েছিল ভারত নাকি আফগানিস্তানেও হামলা চালিয়েছে। তবে আফগান তালিবান সরকার সেই দাবি খারিজ করেছিল। এদিকে ভারতের বিরুদ্ধে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে জইশ এবং লস্কর।
পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন জইশ শীর্ষ কমান্ডার মাসুদ ইলিয়াস কাশ্মীরির এক ভিডিয়ো সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। তাতে তাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ভারতের 'অপারেশন সিঁদুর' অভিযানে জইশ-ই-মহম্মদের (জেইএম) প্রধান মাসুদ আজহারের পরিবার সদস্যদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। ইলিয়াস কাশ্মীরিকে ব্যাখ্যা করতে শোনা যাচ্ছে যে, ৭ মে কীভাবে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী তাদের আস্তানায় প্রবেশ করে আক্রমণ চালিয়েছিল। ভাইরাল ক্লিপে কাশ্মীরি উর্দুতে মাসুদ ইলিয়াস বলেছে, 'আমরা এই দেশের সীমান্ত রক্ষার জন্য দিল্লি, কাবুল এবং কান্দাহারের সঙ্গে লড়াই করেছি। সবকিছু ত্যাগ করার পর, ৭ মে, বাহাওয়ালপুরে ভারতীয় বাহিনী মৌলানা মাসুদ আজহারের পরিবারকে টুকরো টুকরো করে ফেলেছিল।' যদিও ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে লস্কর-ই-তৈয়বার উপ-প্রধান সাইফুল্লাহ কাসুরির একটি ভিডিয়ো। ভিডিয়োতে, কাসুরি অভিযোগ করেছে যে পাকিস্তান সরকার এবং সেনাবাহিনী মুরিদকেতে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদর দফতর পুনর্নির্মাণের জন্য তহবিল সরবরাহ করেছে। এই স্থানটি ভারতের 'অপারেশন সিঁদুর'-এর সময় ধ্বংস করেছিল। প্রায় দুই মিনিটের এই ভিডিয়োটিতে (যার সত্যতা হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি) কাসুরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ভারতকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেয়। নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে লস্কর-ই-তৈয়বা নেতা জোর দিয়ে বলে যে তাদের 'সংকল্প দৃঢ়'। এরই সঙ্গে এই জঙ্গি নেতা আরও দাবি করে যে শীঘ্রই জম্মু ও কাশ্মীরের নদী এবং বাঁধ 'তাদের' হবে। এই কাসুরি ২২ এপ্রিলের পহেলগাঁও হামলার মাস্টারমাইন্ড বলে দাবি করেন অনেকে।