নবপত্রিকা স্নান ও স্থাপন করার মধ্যে দিয়েই শুরু হয় দুর্গাপূজার মূল পর্ব। এই প্রথাটি মূলত শস্য এবং প্রকৃতির দেবীকে আহ্বান করার একটি প্রাচীন রীতি। নবপত্রিকা শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হলো ‘নয়টি পাতা বা নতুন পাতা’। পুরাণের একটি মতে, এই নয়টি পাতা প্রকৃতপক্ষে নয়টি ভিন্ন গাছের নয়টি শাখা বা অংশ, যা নয় দেবীর প্রতীক। আবার অন্য আরেক মতে, নবপত্রিকা সিদ্ধিদাতা গণেশের স্ত্রী। কলাগাছ এখানে প্রতীকী হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
নবপত্রিকার পৌরাণিক ব্যাখ্যা
নবপত্রিকা তৈরির জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়। সাধারণত কলাগাছ, বেলগাছ, হলুদ গাছ, জয়ন্তী, অশোক, মানকচু, শালিধান, ডালিম এবং কচু - এই নয়টি গাছের পাতা বা ডাল ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন - দেবীর আগমন বার্তা ঘোষণা করে নীলকন্ঠ পাখি, কেন শুভ এর দর্শন? জানুন শাস্ত্রমত
নবপত্রিকা পুজোর নিয়ম
দুর্গাপূজার সপ্তমী তিথির সকালে নবপত্রিকা সংগ্রহ করতে হয়। এই কাজ সাধারণত বাড়ির পুরোহিত করে থাকেন। নবপত্রিকা তৈরি করতে একটি সাদা অপরাজিতা লতা দিয়ে এই নয়টি গাছের ডাল বা অংশ একসাথে বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর সেটিকে লাল পাড়ের সাদা শাড়ি দিয়ে একটি ছোট বধূর মতো করে সাজানো হয়। শাড়ি দিয়ে মোড়া নবপত্রিকাটিকে একটি কাঠের বেদীর উপর স্থাপন করা হয়। এরপর এর সাথে একটি কলাগাছও বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর ঘট স্থাপন করা হয় এবং সেই ঘটের পাশে নবপত্রিকা রাখা হয়। এই নবপত্রিকাকেই দেবী দুর্গার প্রতীক হিসেবে পূজা করা হয়। এই সময় মন্ত্র পাঠ ও আরতি করা হয়।
আরও পড়ুন - টাকার ফোয়ারা উৎসবের মরসুমেই, প্রেমও জমে ক্ষীর! দেবীপক্ষে কপাল খুলবে এই ৫ রাশির
নবপত্রিকা বিসর্জনের পদ্ধতি
প্রতিমা বিসর্জনের মতো করেই বিসর্জন হয় নবপত্রিকার। বিজয়া দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জনের সময় নবপত্রিকাও গঙ্গায় বা কোনও পবিত্র জলাশয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়।