পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের দ্বন্দ্ব ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই এই বিরোধ আরও তীব্র হয়েছে। কিন্তু প্রতিবেশী নেপালের ঘটনার পরে খানিকটা পালটেছে সমীকরণ। সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এখন উভয় পক্ষই 'যুদ্ধবিরতি' ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। নেপালের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ১০০ কিমি দীর্ঘ সীমান্ত। এদিকে শিলিগুড়ির চিকেন নেক অংশের সঙ্গে নেপালের সীমান্ত যুক্ত। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'এই ইস্যুগুলি জাতীয় স্বার্থের। এখানে কোনও তৃণমূল-বিজেপি দ্বন্দ্ব নেই। জাতীয় স্বার্থের জন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমরা নিরাপত্তা ইস্যুতে একজোট।' এদিকে কলকাতা সফরে আসা মোদীর গলাতেও তৃণমূল বিরোধী কোনও বার্তা শোনা যায়নি।
ফোর্ট উইলিয়ামে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী সামরিক সম্মেলন উদ্বোধন করতে কলকাতায় এসেছিলেন মোদী। এখানে বিজেপি কর্মীদের একটি সভাতেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এদিকে ফোর্ট উইলিয়ামের অনুষ্ঠানে মোদীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, সিডিএস, তিন বাহিনীর প্রধানরা। সেই অনুষ্ঠানে মোদীর গলায় রাজনৈতিক কোনও বার্তা ছিল না। তিনি সেখানে শুধুই সেনার আধুনিকীকরণ থেকে সংস্কার নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে।
এই সবের মাঝেই জানা গিয়েছে, নেপাল সীমান্তে আরও বেশি সংখ্যক এসএসবি মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে রাজ্যের ইন্টেলিজেন্স উইং ক্রমাগত তথ্য ভাগ করে চলেছে কেন্দ্রের সঙ্গে। রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার নিজে সেই সব রিপোর্ট পাঠাচ্ছেন। এদিকে রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের সমন্বয় বজায় রেখেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। তিনি পিএমও এবং স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রেখে চলেছেন।
এদিকে রিপোর্টে বি করা হয়েছে, কাঠমান্ডু বাজারে নাকি চিনা টাকা ব্যবহার করা যাচ্ছে বলে জানতে পেরেছে বঙ্গ ইন্টেলিজেন্স। যা থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে, পড়শি দেশে চিনা প্রভাব বেড়েছে এই অস্থিরতার মাঝে। এর আগে নেপালের ওলি সরকার এমনিতেই চিন ঘনিষ্ঠ ছিল। সেই সরকারের পতনের পর নেপালে চিন নিজেদের প্রভাব বজায় রাখার জন্য কী পরিকল্পনা করছে, সেই বিষয়ে ধারণা রাখতে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করছে কেন্দ্র এবং রাজ্য।