ডিজিটাল যুগে ভোটের লড়াই আর মাঠে-ময়দানে সীমাবদ্ধ নেই। সোশ্যাল মিডিয়াই এখন বিরোধী আক্রমণ ঠেকানো ও জনমত গঠনের সবচেয়ে বড় মঞ্চ। তাই এবার কৌশল পাল্টাতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলীয় সূত্রে খবর, শুধু রাজ্য বা জেলা নয়, প্রতিটি বিধানসভা এলাকায় আলাদা মুখপাত্র নিয়োগের পরিকল্পনা করছে শাসকদল। উদ্দেশ্য একটাই দলের বক্তব্য একসুরে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং বিরোধীদের সরাসরি পাল্টা জবাব দেওয়া।
আরও পড়ুন: BJP কর্মীকে জুতোপেটা দলের কাউন্সিলরের, খড়গপুরে প্রকাশ্যে পদ্ম শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব!
তৃণমূলের মতে, সরকারি প্রকল্পের দৌলতে গ্রামে-গঞ্জে তাদের সংগঠন মজবুত হলেও সোশ্যাল মিডিয়ার লড়াইয়ে অনেক সময় পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে। বিরোধীদের পোস্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে, কিন্তু তার জবাব দিতে দলীয় নেতাদের মধ্যে অনীহা চোখে পড়ছে। বড় বড় নেতারা তদন্তের চাপে সক্রিয় না থাকায় সুযোগ নিচ্ছে প্রতিপক্ষ। সেই শূন্যতা পূরণ করতেই প্রতিটি বিধানসভায় মুখপাত্র নিয়োগের সিদ্ধান্ত। এই পদে থাকবেন শিক্ষিত, মার্জিত অথচ তীক্ষ্ণ ভাষণে দক্ষ মানুষ। বিশেষ করে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বাংলার নারীদের। রাজনৈতিকভাবে সচেতন মহিলা নেত্রীদের এই জায়গায় এগিয়ে আনার চেষ্টা করছে তৃণমূলের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক। স্থানীয় স্তরে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে কে এই দায়িত্ব পালনে সবচেয়ে যোগ্য।
নতুন মুখপাত্ররা তাঁদের বিধানসভায় দলের পক্ষে বক্তব্য রাখবেন। স্থানীয় সমস্যা, বিরোধীদের অভিযোগ, এমনকি সংবাদমাধ্যমে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করা সব দায়িত্বই থাকবে তাঁদের কাঁধে। পাশাপাশি, প্রতিটি প্রকাশ্য মন্তব্য দলীয় নীতির সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হবে। ফলে অযাচিত বা বিব্রতকর মন্তব্যের সংখ্যা কমে আসবে বলেই আশা শাসকদলের।
তৃণমূলের আরেকটি লক্ষ্য, এই পদ সৃষ্টি করে জেলা ও ব্লক স্তরে চলা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে লাগাম টানা। কারণ মুখপাত্র নিয়োগের পর দলের পক্ষ থেকে কে কথা বলবেন, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। এতে ভেতরের লড়াই কমবে এবং বার্তা পৌঁছবে আরও সংগঠিতভাবে।
তৃণমূল নেতারা মনে করছেন, এই উদ্যোগ বিরোধীদের তুলনায় তাঁদের প্রচারযুদ্ধে এগিয়ে রাখবে। কারণ প্রতিটি বিধানসভায় একজন করে দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখপাত্র থাকলে বিরোধীদের আক্রমণের পাল্টা জবাব মুহূর্তেই পৌঁছে যাবে মানুষের কাছে। একইসঙ্গে দলীয় বার্তা পৌঁছবে আরও স্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে।