বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গলায় এতদিন '৭০-৩০' সমীকরণের কথা শোনা যেত। খোলাখুলিই শুভেন্দু বলতেন, মুসলিমদের ভোট বিজেপি পায় না। এবং তিনি হিন্দু ভোট একজোট করার ডাক দিতেন। ইঙ্গিত দিতেন, মুসলিম ভোট বিজেপির চাই না। তবে রাজ্য সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে সেই অঙ্ক বদল করছেন শমীক ভট্টাচার্য। এই আবহে সম্প্রতি মুসলিমদের মাঝে গিয়ে উল্লেখযোগ্য বার্তা দিয়ে এলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ। সোমবার রাতে নিজের সমাজমাধ্যমে সেই বক্তব্যের ভিডিয়ো পোস্ট করেন শমীক। তাতে শমীককে বলতে শোনা যাচ্ছে, 'ভারতীয় মুসলিমদের কেউ কেশ স্পর্শ করতে পারবে না'।
শমীক ভট্টাচার্য একটি ছবি পোস্ট করেন। সেই ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে তাঁর কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে। আর সেই ছবিতে দেখা গিয়েছে, একটি মাদ্রাসার সামনে দাঁড়িয়ে বেশ কয়েকজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন শমীক। অডিয়ো বার্তায় শমীককে বলতে শোনা যায়, 'আমি বারংবার বলেছি, পশ্চিমবঙ্গে যত হিন্দু, হিন্দু উদ্বাস্তু এবং ভারতীয় মুসলিম রয়েছেন তাদের কেশ স্পর্শ করার ক্ষমতা কারও নেই। যে সকল ভারতীয় মুসলিমরা সেদিন এই দেশ ছেড়ে, এই দেশকে দারুল হরব (যেখানে অমুসলিম শাসনব্যবস্থা আছে) বলে পূর্ব পাকিস্তানে চলে যায়নি, তাদের পাশে বিজেপি আছে আর থাকবেও। তাদের কেশ স্পর্শ করার ক্ষমতা কারওর নেই, সে যেই কমিশন আসুক না কেন।'
এর আগে বিজেপির একটা অংশ বলে আসছিল, বঙ্গে জিততে মুসলিম ভোটের প্রয়োজন নেই। এই আবহে হিন্দু ভোটকে একজোট করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল গেরুয়া শিবির। তবে শমীক সেই সমীকরণে আস্থা রাখছেন না। এদিকে মুসলিম ভোট নিজেদের ঝুলিতে রাখতে তৃণমূল কংগ্রেস এসআইআর নিয়ে জুজু দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করছে বিজেপি। এই আবহে বিজেপির রাজ্য সভাপতি ভারতীয় মুসলিমদের আশ্বাস দিলেন, তাঁদের কিছু হবে না।
বিহারের পর পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধন (এসআইআর) করার প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এর আওতায় মঙ্গলবার থেকে নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হচ্ছে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল, অতিরিক্ত সিইও দিব্যেন্দু দাস এবং অরিন্দম নিযোগীর সঙ্গে মঙ্গলবারের প্রশিক্ষণ অধিবেশনের নেতৃত্ব দেবেন। প্রসঙ্গত, আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। এই আবহে এসআইআর-কে ইস্যুকে তৃণমূল যাতে নিজেদের রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানাতে পারে, তার জন্যে ঘুঁটি সাজাচ্ছে বিজেপি।