কলকাতা শহরের নাগরিক পরিষেবা টিকিয়ে রাখতে এখন নাজেহাল অবস্থায় পড়েছে কলকাতা পুরসভা। কারণ, প্রায় ৩২ হাজার স্থায়ী পদ শূন্য পড়ে রয়েছে। লোকবলের ঘাটতির কারণে নিত্যদিনের কাজকর্ম থেকে শুরু করে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন সব ক্ষেত্রেই সমস্যায় পড়ছে পুরসভা। এই তথ্যই সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসে পুর-অধিবেশনে, বিজেপি কাউন্সিলার সজল ঘোষের এক প্রশ্নের জবাবে।
আরও পড়ুন: কলকাতায় বদল আসছে পার্কিং ব্যবস্থায়, ১৪টি রাস্তায় দায়িত্ব বণ্টন হবে ই-অকশনে
পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগের মেয়র পারিষদ বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় জানান, কলকাতা পুরসভায় অনুমোদিত স্থায়ী পদ রয়েছে ৪৬,৪১৮টি। এর মধ্যে বর্তমানে শূন্য রয়েছে ৩১,৯০০টি পদ। এর মধ্যে ২২,৬২৪টি পদে সরাসরি নিয়োগ সম্ভব। ইতিমধ্যেই ৭২৯৫টি পদে নিয়োগের জন্য রাজ্যের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, যদিও তার অনুমোদন মেলেনি। সেই ফাইলগুলির মধ্যে মাত্র ৮৬৪টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনকে জানানো হয়েছে। বাকিগুলির ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা চলছে।
অধিকারিকদের দাবি, অনুমোদিত পদে নতুন করে কর্মী নিয়োগের জন্য রাজ্য সরকারের ছাড়পত্র জরুরি। ফলে বারবার ফাইল পাঠানো হলেও প্রক্রিয়া আটকে যাচ্ছে। একাধিক ক্ষেত্রে আইনি জটিলতাও নিয়োগে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপাতত অনেক কাজ সামলাতে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। তবে আশা করা হচ্ছে, মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শূন্যপদে পরীক্ষার আয়োজন শীঘ্রই হবে।
এছাড়াও পুরসভা ইতিমধ্যেই একটি পদ পুনর্বিন্যাস কমিটি গঠন করেছে। প্রযুক্তির কারণে অনেক পুরনো পদ এখন কার্যত অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন বিভাগে নতুন পদ সৃষ্টির প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এই কমিটি চূড়ান্তভাবে কোন কোন পদ রাখা হবে, কোথায় নতুন পদ তৈরি করা হবে, সেই সুপারিশ দেবে। বর্তমানে চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছে।
বিজেপি কাউন্সিলার সজল ঘোষ কটাক্ষ করে বলেন, রাজ্যে পাঁচ লক্ষের বেশি পদ খালি। শুধু কলকাতা পুরসভাতেই শূন্য পদ প্রায় ৩২ হাজার। পরিষেবা ধরে রাখা এখন দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে। বেকারদের কান্না এই সরকারের কানে ঢুকছে না। পুলিশ, দমকল, শিক্ষক সব জায়গায় শূন্য পদ রয়েছে। সরকার হয় দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ করে, নয়তো একেবারেই নিয়োগ করে না। অবিলম্বে স্থায়ী পদে নিয়োগ দরকার।