ভারতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয় ১৫ আগস্ট। তবে এই দিনটির এক মাস আগেই আইনমাফিক স্বাধীনতা পেয়েছিল ভারত। একই সঙ্গে নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল দেশটির আগামী ভাগ্যও। আর যেদিন এই সব কিছু হয়, সেই দিনটি ছিল ১৮ জুলাই। ১৯৪৭ সালের ১৮ জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাশ হয় ভারতীয় স্বাধীনতা আইন। এই আইনের ২২ পাতার নির্যাস-প্রতিলিপি আজও ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। ওই ২২ পাতার নির্যাসেই লেখা ছিল স্বাধীন ভারতের ভাগ্য কেমন হতে চলেছে আগামীদিনে।
মাউন্টব্যাটেন প্ল্যান
একটু পিছিয়ে যাওয়া যাক। ১৯৪৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। ভারতে এসে পৌঁছালেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন। ভারতের টালমাটাল পরিস্থিতিতে দ্রুত ক্ষমতার হস্তান্তর প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেছিলেন। সেই মাফিক প্রথমে জিন্নাকে অনুরোধ করেন ভারত অখণ্ড রাখার। কিন্তু মুসলিম নাগরিকদের জন্য একটি পৃথক দেশের ব্যাপারে তিনি ছিলেন বদ্ধপরিকর। শেষমেশ সেটাই ভবিতব্য ধরে নিয়ে লর্ড মাউন্টব্যাটেন একটা প্ল্যান তৈরি করেন। ইতিহাসে যা মাউন্টব্যাটেন প্ল্যান নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন - লর্ড মাউন্টব্যাটেনের ব্যক্তিগত কারণেই কি ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস? কী বলছে ইতিহাস
কী কী ছিল ওই প্ল্যানে?
ওই প্ল্যানে মূলত ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি পৃথক রাষ্ট্র তৈরির পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পরিকল্পনা ছিল। পরিকল্পনা ছিল বাংলা ও আসাম নিয়ে। পরিকল্পনা ছিল পাঞ্জাব নিয়েও। এই মাউন্টব্যাটেন প্ল্যানের ভিত্তিতেই ভারতীয় স্বাধীনতা বিল তৈরি হয় ব্রিটেনে। ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত চরম ব্যস্ততার মধ্যে সবটা সংঘটিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন - ভারতের স্বাধীনতার সময় ছিল না কোনও জাতীয় সংগীত, কীভাবে কবে নির্বাচিত হল ‘জনগণমন’?
১৮ জুলাই যা ঘটেছিল
১৯৪৭ সালের ৫ জুলাই। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাশ করা হল ভারতীয় স্বাধীনতা বিল। এরপর সেটি পাঠানো হয় রাজ-অনুমোদনের জন্য। ১৮ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে সেই রাজ-অনুমোদন আসে। আইনে পরিনত হয় বিলটি। এর পরবর্তী প্রক্রিয়াটি ছিল শুধু ক্ষমতা হস্তান্তরের। যা লর্ড মাউন্টব্যাটেন ভারতে এসে একমাস সময় নিয়ে সম্পন্ন করেন। যেহেতু ১৫ অগস্ট ব্রিটেনের তরফে ভারতের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়, তাই এই দিনটিই আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়।