২০২৬-এর আগে সাংগঠনিক রদবদলের পথে নামল তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার ক্যামাক স্ট্রিটের দফতরে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের জেলা নেতৃত্ব, বিধায়ক এবং একাধিক সংগঠনের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটের আগে ব্লক ও টাউন স্তরে নেতৃত্বে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে দলীয় কর্মপদ্ধতির খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখেন তিনি।
আরও পড়ুন: সকালেই হাইকোর্টে হাজির অভিষেক, কোন মামলায় আদালতে যেতে হল সাংসদকে
সূত্রের খবর, বৈঠকটি দুই পর্বে ভাগ করা হয়েছিল। প্রথম পর্বে ছিলেন পূর্ব বর্ধমানের আট বিধায়ক ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনের দায়িত্বশীলরা। দ্বিতীয় দফায় যোগ দেন বাকি আট বিধায়ক। প্রতিটি ব্লক ও শহর এলাকায় সভাপতি পদে কারা দায়িত্বে থাকবেন, এ নিয়ে সবার মতামত শোনেন অভিষেক। জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, যুব তৃণমূল সভাপতি রাসবিহারী হালদার থেকে শুরু করে শাখা সংগঠনের অন্যান্য সভাপতিদেরও মতামত জানতে চান তিনি।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে দুই বর্ধমানেই সব আসনে জয় পেয়েছিল তৃণমূল। তবে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কিছু এলাকায় বিজেপির কাছে পিছিয়ে পড়ে দল। সেই অভিজ্ঞতাই সামনে রেখে অভিষেকের বার্তা স্পষ্ট, কাজে ঢিলেমি নয়, বিধানসভার আগে ঘাটতি মেরামত করতেই হবে। এজন্য ব্লক, টাউন নেতৃত্ব থেকে শুরু করে পুরসভা স্তর পর্যন্ত সব পদে কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে রদবদল হবে।
বৈঠকে প্রত্যেক বিধায়ককে ব্লক সভাপতির সম্ভাব্য নাম প্রস্তাব করতে বলা হয়। সূত্রের খবর, অনেক ক্ষেত্রেই বিধায়করা এমন কিছু নাম পান, যাঁদের তাঁরা চিনতেই পারেননি। অভিষেক সাফ জানিয়েছেন, দলের তরফে সমস্ত নাম যাচাই-বাছাই করে পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, রাজ্যের প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীও। সিদ্দিকুল্লাহকে ঘিরে সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়েও আলোচনা হয়। তবে সেই বিষয়টি রাজ্য সভাপতির বিবেচনার উপর ছেড়ে দেন অভিষেক। জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচিকে সফল করার জন্য প্রতিটি বিধায়ককে বাড়তি দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছে। মানুষের কাছে সরকারের প্রকল্প পৌঁছে দিতে দল আরও সক্রিয় হচ্ছে। তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, আসন্ন রদবদলই দলের সাংগঠনিক শক্তি নতুন করে ঝালিয়ে নেবে। লোকসভা ভোটের আগে বর্ধমানের মতো গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলিতে অভিষেকের এই বৈঠক তাই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।