সোমবার সকালে ব্যস্ততম সময়ে আচমকাই কলকাতা হাইকোর্টে উপস্থিত হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সাধারণত রাজনৈতিক সভা বা সাংগঠনিক কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকা অভিষেকের এই আদালত যাওয়া ঘিরেই মুহূর্তে কৌতূহল ছড়িয়ে পড়ে। কেন তিনি হাইকোর্টে গেলেন? তাহলে কি নতুন কোনও মামলায় জড়িয়েছেন অভিষেক?
আরও পড়ুন: তৃণমূলে পদ পেতে গেলে পারফরম্যান্সই শেষ কথা, নেতাদের কড়া বার্তা অভিষেকের
এদিন শুরুতে স্পষ্ট না হলেও পরে জানা যায়, ২০২৪ লোকসভা ভোটে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে যে মামলা চলছে, তার জন্যই তিনি কলকাতা হাইকোর্টে এসেছিলেন। ওই মামলায় বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ দাসের করা ইলেকশন পিটিশনের জবাবে পাল্টা হলফনামা জমা দেওয়ার জন্যই আদালতে পৌঁছেছিলেন অভিষেক। আদালতের নথিতে ব্যক্তিগত স্বাক্ষর করার প্রয়োজন ছিল, তাই এদিন নিজে হাজির হন তিনি।গত লোকসভা ভোটে ডায়মন্ড হারবারে বিপুল ব্যবধানে জিতেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পেয়েছিলেন ১০ লক্ষ ৪৮ হাজারের বেশি ভোট, যেখানে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির অভিজিৎ দাস থেমে যান ৩ লক্ষ ৩৭ হাজারের কিছু বেশি ভোটে। প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ ভোটে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও, ফল প্রকাশের পর থেকেই বিজেপি পক্ষ অভিযোগ করে আসছে যে ওই কেন্দ্রে ভোট ছিল ‘অস্বচ্ছ’ এবং ‘প্রহসন’। সেই অভিযোগ নিয়েই আদালতের দ্বারস্থ হন অভিজিৎ।
শুধু অভিজিৎ দাস নন, সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক বিজেপি নেতা অভিষেকের জয়ের ধরন নিয়ে সরব হয়েছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর অভিযোগ করেছিলেন, ডায়মন্ড হারবারে হাজার হাজার ভুয়ো ভোটারের নাম রয়েছে। পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি তৃণমূল। অভিষেকের প্রতিনিধি দল পেনড্রাইভে ভিডিয়ো-ডেটা নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিল অনুরাগের দফতরে, দাবি করে যে প্রতিটি তথ্য তাঁদের হাতে রয়েছে।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও সম্প্রতি একই সুরে অভিযোগ তুলেছেন। ফলে আদালতের মামলা এখন শুধু আইনি প্রশ্ন নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, বছর ঘুরলেই বিধানসভা ভোট। ঠিক সেই সময়েই এই মামলার নতুন অগ্রগতি রাজ্য রাজনীতিতে আলাদা মাত্রা যোগ করছে। তৃণমূল চাইছে আদালতের মাধ্যমে অভিযোগ খারিজ হয়ে যাক, অন্যদিকে বিজেপি চেষ্টা করছে এই ইস্যুকে সামনে রেখে জনমত তৈরি করতে।