বিধানসভায় বৃহস্পতিবারের অশান্তির পর মুখ খুললেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি বিধায়কদের বিক্ষোভ, কাগজ ছেঁড়া, নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি সব মিলিয়ে নজিরবিহীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল রাজ্য বিধানসভায়। ঘটনার পরদিন স্পিকার স্পষ্ট জানালেন, তিনি যা করেছেন আইন মেনেই করেছেন।
আরও পড়ুন: বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে মার্শালদের ধস্তাধস্তি, সাসপেন্ড একাধিক BJP MLA
বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, বৃহস্পতিবারের ঘটনায় একাধিক অভিযোগ এসেছে। এমনকি একজন মার্শাল ও বিরোধী দলের চিফ হুইপ এখন হাসপাতালে। এ ধরনের ঘটনা কোনওভাবেই কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। অধ্যক্ষ জানান, কার্যবিবরণীতে কী কী বাদ দেওয়া হবে তা খতিয়ে দেখে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, অনেকে বলেন স্পিকার পক্ষপাতদুষ্ট। কিন্তু এই চেয়ার পক্ষপাত করে না। সমালোচনা সবারই হয়।তিনি আরও বলেন, বিধানসভার নিয়ম মেনে চললে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হতো না। বল প্রয়োগ করলে বা বিশৃঙ্খলা বাধালে, আইন অনুযায়ী তাঁকে কঠিন পদক্ষেপ করতে বাধ্য হতে হয়।
স্পিকার বলেন, ‘আমি পক্ষপাতিত্ব করি না। বিজেপির আরও পড়াশোনা দরকার, নিজেদের সংযত রাখা দরকার। বিধানসভায় এর আগে কখনও মারামারি হয়নি।’ বৃহস্পতিবারের অধিবেশনে মূলত বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের ওপর অবমাননার প্রতিবাদে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তার আগেই বিরোধী বেঞ্চে তৈরি হয় অশান্তি। স্পিকারের ডাকে উপস্থিত না থাকায় প্রথমে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু হঠাৎই অধিবেশন কক্ষে ঢুকে পড়েন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। এরপর বিজেপি বিধায়কেরা দাবি করতে থাকেন, তাঁকেই বক্তব্য রাখতে দিতে হবে। স্পিকার অনুমতি দিলেও সময় সীমিত করে দেন। এর পরেই ফের শুরু হয় হট্টগোল।
অধিবেশনে শুভেন্দু অধিকারীর সাসপেনশন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তাঁকে একাধিকবার সতর্ক করেও কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত তাঁকেও সাসপেন্ড করা হয়। কিন্তু তিনি আসন ছাড়তে অস্বীকার করেন। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হলে বিধানসভার নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে সরাতে গেলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। শেষে মার্শাল ডেকে তাঁকে বাইরে করা হয়।
সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী নিজে ওয়েলে নেমে এসে তৃণমূল বিধায়কদের শান্ত করেন। তবুও অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে ফের বিক্ষোভ চরমে ওঠে। প্রায় দু’ঘণ্টার মধ্যে স্পিকার টানা পাঁচ বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, অশোক দিন্দা, বঙ্কিম হাজরা, মিহির গোস্বামী ও শঙ্কর ঘোষকে সাসপেন্ড করেন। বৃহস্পতিবারের সেই ঘটনা প্রসঙ্গে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার বলেন, ‘আমি আইন মেনে কাজ করেছি।’