নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে আর ফেরা হল না মৎস্যজীবীর। নদীতে নামতেই ওই মৎস্যজীবীকে টেনে নিয়ে গেল একটি বিশাল কুমির। ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের লাহিড়িপুর পঞ্চায়েতের ট্রিবলিঘেরি এলাকার দত্ত নদীতে। ঘটনার পর থেকে নদীতে চলছে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান। কিন্তু এখনও তাঁর কোনও হদিশ মেলেনি।
আরও পড়ুন: আইআইটি বম্বের ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিশালাকার কুমির, ভাইরাল ভিডিয়ো
নিখোঁজ মৎস্যজীবীর নাম সুনীল মণ্ডল (৫০)। তিনি নদী ও খাঁড়ি থেকে মাছ–কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রতিদিনের মতোই তিনি লাহিড়িপুর পঞ্চায়েতের ট্রিবলিঘেরি এলাকার দত্ত নদীতে জাল ফেলতে যান। দুপুর দু’টো নাগাদ আচমকা পিছন দিক থেকে একটি বিশাল কুমির তাঁর উপর হামলা চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, কুমির তাঁকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে নদীর গভীরে। ঘটনাটি প্রথম দেখতে পান মাঝি সাধন মণ্ডল নামে অন্য এক মৎস্যজীবী। তিনি দ্রুত নৌকো নিয়ে মাঝ নদীতে এগিয়ে গিয়ে সুনীলকে কুমিরের কবল থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কুমিরের শক্ত চোয়াল থেকে তাঁকে আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এর পরেই খবর দেওয়া হয় গ্রামে এবং থানায়।
খবর পেয়ে বন দফতর, পুলিশ ও স্থানীয় গ্রামবাসীরা যৌথভাবে নদীতে তল্লাশি শুরু করে। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা অভিযানের পরও সুনীলের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যা নামলেও উদ্ধার অভিযান বন্ধ হয়নি। নিখোঁজের খবরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সুনীল মণ্ডলের পরিবারে শোকের ছায়া নেমেছে। তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি মণ্ডল ভেঙে পড়া কণ্ঠে বলেন, সকালে অন্য দিনের মতোই তাঁর স্বামী নদীতে গিয়েছিলেন জাল ফেলতে। কখনও ভাবেননি এভাবে একটা দুর্ঘটনা ঘটবে। সংসারের একমাত্র ভরসা ছিলেন তাঁর স্বামী। পরিবারের লোকজন ও গ্রামবাসীরা এখন প্রশাসনের কাছে মরদেহ উদ্ধারের আবেদন জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সুন্দরবনের গ্রামগুলিতে এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। মাছ বা কাঁকড়া ধরতে গিয়ে প্রায়ই কুমিরের হামলার মুখে পড়তে হয় মৎস্যজীবীদের। জীবন ও জীবিকার এই দ্বন্দ্ব তাঁদের প্রতিদিনই ভোগাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সুনীল মণ্ডলের খোঁজ না মেলায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।