তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এবার আদালতের দ্বারস্থ হলেন অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। ১ বা ১০ কোটি নয়, বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে কুণালের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করলেন অভিনেতা। মামলার আবেদনে মিঠুন দাবি করেছেন, কুণালের মন্তব্য তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সম্মানহানি করেছে। পেশাগত ক্ষেত্রেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গ বিজেপির অন্তর্কলহে বিরক্ত মিঠুন, জেলা বৈঠক এড়াচ্ছেন ‘মহাগুরু’
এর আগে এই মন্তব্য নিয়ে কুণাল ঘোষকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলেন মিঠুন। কিন্তু সেই জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হলেন তিনি। মামলায় অভিনেতার বক্তব্য, রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ, পদ্মভূষণ ও দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারপ্রাপ্ত তিনি। অথচ তাঁর নামকে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে মিথ্যা কুৎসার সঙ্গে জড়ানো হয়েছে। মামলার নথিতে মিঠুন চক্রবর্তী অভিযোগ করেছেন, তাঁকে চিটফান্ড কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করেছিলেন কুণাল ঘোষ। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে।
এছাড়াও, তাঁর ছেলে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত বলে কুণাল দাবি করেন, যা একেবারেই ভিত্তিহীন। এমনকি স্ত্রীকেও আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত বলে প্রচার করেন কুণাল। মিঠুনের মতে, এসব মন্তব্যে তাঁর সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। শুধু তাই নয়, নতুন চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপনের কাজ থেকেও তিনি বঞ্চিত হয়েছেন। বর্তমান কাজকর্মেও প্রভাব পড়েছে। ফলে পেশাগত ক্ষতির পাশাপাশি ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিও মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তাই ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০০ কোটি টাকা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। পাশাপাশি আদালতের কাছে তাঁর আর্জি কুণালকে এমন ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত রাখার নির্দেশ দেওয়া হোক।
অন্যদিকে, এরপরেই পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কুণাল ঘোষ। নিজের অবস্থানে তিনি অনড়। পাল্টা সুরে তিনি বলেন, যাঁর সত্যিকারের মান থাকে, তিনি কি বারবার দলবদল করেন? ভয় পেয়ে কেউ দল পাল্টায়! কোর্টে দেখা হবে। এখানেই থেমে থাকেননি কুণাল। তিনি আরও জানিয়েছেন, তিনিও মিঠুনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। চার-পাঁচটি চিটফান্ডের সঙ্গে মিঠুনের কী সম্পর্ক ছিল, সেটার পুরোটা তিনি আদালতেই তুলে ধরবেন এবং সিবিআই তদন্ত চাইবেন।
হাই কোর্ট সূত্রে খবর, এই মানহানির মামলায় মিঠুন চক্রবর্তী সর্বোচ্চ ‘কোর্ট ফি’ ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। সাধারণত বড় অঙ্কের মানহানির মামলায় এই সর্বোচ্চ ফি জমা দিতে হয়। মামলার শুনানির দিন এখনও ঠিক হয়নি। তবে আইনজীবী মহলের অনুমান, আগামী সপ্তাহেই এই মামলা আদালতের তালিকায় উঠতে পারে।