তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা এবং সাগরদিঘি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান এবার পুলিশের জালে। বুধবার সন্ধ্যায় কলকাতার পার্ক স্ট্রিট এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে সাগরদিঘি থানার পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকা দীর্ঘ। পঞ্চায়েত সমিতির আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলা কর্মাধ্যক্ষর সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও কটূক্তি থেকে শুরু করে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আধিকারিকদের মারধর এবং সরকারি জমি দখলের মতো একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: অবৈধ নির্মাণ নিয়ে আদালতে মামলা, TMC নেতার নির্দেশে ‘সামাজিক বয়কট’ পরিবারকে
দলীয় সূত্রে খবর, এর আগে মহিলা কর্মাধ্যক্ষের সঙ্গে অশোভন আচরণের মামলায় তিনি জামিনে মুক্ত ছিলেন। কিন্তু অভিযোগ থামেনি। বরং ক্রমাগত অভিযোগের পাহাড় জমতে থাকে তাঁর বিরুদ্ধে। এমন পরিস্থিতিতে জেলা নেতৃত্বের তরফে তাঁকে পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা সাংসদ খলিলুর রহমান সরাসরি সেই বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন। কিন্তু মশিউর কোনও নির্দেশই মানেননি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, একাধিক মামলায় অভিযুক্ত থাকার পর থেকেই মশিউর এলাকায় দেখা দিচ্ছিলেন না। ফোনও করেছিলেন বন্ধ। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ এক সহযোগীর মোবাইল ফোনের লোকেশন ধরে পুলিশের হাতে আসে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র। সেই সূত্র ধরেই বুধবার পার্ক স্ট্রিট থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। রাতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় সাগরদিঘি। বৃহস্পতিবার জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয় অভিযুক্তকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছেন মশিউর। প্রশাসনিক কাজকর্মে হস্তক্ষেপ থেকে শুরু করে দলীয় পদ ব্যবহার করে বিভিন্ন বেআইনি কাজের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন মশিউর। দলীয় মহলে এখন প্রশ্ন উঠেছে, এত অভিযোগ সত্ত্বেও এতদিন কীভাবে সক্রিয় ছিলেন তিনি। গ্রেফতারের পর দল তাঁকে নিয়ে আরও কঠোর অবস্থান নিতে পারে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।