মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তার প্রতিবাদে মেয়ো রোডে ধর্নায় বসতে চেয়ে প্রাক্তন সেনা আধিকারিকদের একাংশ আবেদন জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টে। পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় তাঁরা আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। কলকাতা হাইকোর্ট সেক্ষেত্রে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে। আগামী সোমবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।
আরও পড়ুন: মমতার '২০০ জওয়ান পালানোর' মন্তব্যের পর মঞ্চ বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলল সেনা
সোমবার ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে তৃণমূলের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর হামলা ও বাংলা ভাষার অপমানের অভিযোগে এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল শাসকদল। সেই উদ্দেশ্যে এলাকায় একটি মঞ্চও বাঁধা হয়েছিল। দুপুরের পর সেনার তরফে হঠাৎই সেই মঞ্চ সরানোর কাজ শুরু হয়। সেনার দাবি ছিল, ময়দানের ওই জায়গায় মঞ্চ বাঁধার অনুমতি দু’দিনের জন্য দেওয়া হয়েছিল অথচ কাঠামো প্রায় এক মাস ধরে অস্থায়ীভাবে ছিল। এ নিয়ে আয়োজকদের একাধিকবার জানানো হলেও কোনও সাড়া মেলেনি। কলকাতা পুলিশকেও এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছিল বলে সেনা জানায়।
খবর পেতেই সরাসরি গান্ধীমূর্তির সামনে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাঙা মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি জানান, সেনাকে উদ্দেশ্য করে তাঁর কোনও ক্ষোভ নেই। তাঁর কথায়, ‘আমরা সেনার উপর গর্বিত। আর্মি আমার বন্ধু। তাঁদের বিরুদ্ধে কিছু বলার নেই।’ তবে এই ঘটনার নেপথ্যে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রভাব রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মমতার দাবি, সেনাকে যখন দিল্লির নির্দেশে কাজ করতে হয়, তখন দেশ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ২০০ জন জওয়ান তাঁকে দেখে স্থান ত্যাগ করেন। তখন তিনি তাঁদের উদ্দেশে বলেন, ‘কেন পালাচ্ছেন? আপনারা তো আমার বন্ধু। এটা আপনাদের দোষ নয়, বিজেপির চাপে আপনাদের দিয়ে করানো হয়েছে।’
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যেই ক্ষুব্ধ হন প্রাক্তন সেনা আধিকারিকদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, সেনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে টেনে এনে মুখ্যমন্ত্রী অসম্মান করেছেন। সেই কারণেই তাঁরা মেয়ো রোডে ধর্নায় বসার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু কলকাতা পুলিশ অনুমতি দেয়নি। এর পরেই আইনি পথে হেঁটে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। আদালত তাঁদের মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে।