অবিরাম বৃষ্টিতে দুর্বল বাড়ি ভেঙে পড়ে ঘটল মর্মান্তিক ঘটনা। একসঙ্গে প্রাণ গেল এক পরিবারের তিন সদস্যের। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজারে এই মর্মান্তিক ঘটনায় এক মহিলা ও তাঁর দুই নাবালিকা কন্যার মৃত্যু হয়। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে ভাঙল মাটির বাড়ি, পুরুলিয়ায় দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু একই পরিবারের ৩ জনের
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম বৃহস্পতিদেবী কর্মকার এবং তাঁর দুই মেয়ে শীলা ও প্রিয়া। মন্দিরবাজার বিধানসভার সারদেশ্বরী স্কুলের কাছে কামারপাড়া গ্রামে থাকতেন তাঁরা। সেদিন রাতে প্রতিদিনের মতো খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমোতে গিয়েছিলেন তিনজন। হঠাৎ মাঝরাতে প্রচণ্ড শব্দে ধসে পড়ে কাদামাটির তৈরি তাঁদের বাড়ি। ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই গুরুতর জখম হন সকলে।চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। খবর যায় থানায়। স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে উদ্ধার কাজে নামে পুলিশ। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কর্মকার পরিবার সরকারি আবাসন প্রকল্পে নতুন বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছিলেন। তবে টানা বর্ষার কারণে কাজ এগোতে পারেনি। ফলে ঝুঁকি নিয়েই দুর্বল কাঁচা বাড়িতে দিন কাটাচ্ছিলেন তাঁরা। গত কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টিতে বাড়ির দেওয়াল আরও নরম হয়ে পড়ে, যার ফলেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্থানীয় বিধায়ক জয়দেব হালদার। তিনি শোকাহত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন। পাশাপাশি মৃতদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সরকারি সাহায্য ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান। প্রশাসনিক মহল জানিয়েছে, চলতি বর্ষায় দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় টানা বৃষ্টিতে মাটির বাড়ি ভেঙে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মন্দিরবাজারের এই দুর্ঘটনা সেই তালিকায় নতুন সংযোজন। এলাকাবাসীর দাবি, ঝুঁকিপূর্ণ মাটির বাড়ি চিহ্নিত করে দ্রুত নতুন ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করা দরকার, নইলে আরও প্রাণহানির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।