নিম্নচাপ ও মৌসুমী অক্ষরেখার প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরে পুরুলিয়াসহ গোটা দক্ষিণবঙ্গেই চলছে টানা বৃষ্টি। তার মধ্যেই পুরুলিয়া জেলায় ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। প্রবল বর্ষণের ফলে ভেঙে পড়ল মাটির বাড়ি। আর মাটির দেওয়ালের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ গেল একই পরিবারের তিনজনের। ঘটনায় আহত আরও তিনজন। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। দুর্ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন পুরুলিয়ার বহু মাটির বাড়ির বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: সাতসকালেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বাড়ি, কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মৃত ১
ঘটনাটি ঘটেছে তামনা থানার অন্তর্গত ভান্ডার পুয়াড়া চিপিদা পঞ্চায়েতের রমাইগাড়া গ্রামে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন অমিত তাঁতি, তাঁর স্ত্রী রিমঝিম শবর এবং এক আত্মীয়া বিনতি শবর। জানা গিয়েছে, অমিতবাবু রায়গঞ্জের বাসিন্দা। স্ত্রী ও পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে এসে ছিলেন এই গ্রামে। সেই সময়েই ঘটে বিপত্তি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালেই আচমকা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ওই মাটির বাড়ির একাংশ। ভেতরে ছিলেন ছয়জন। দুর্ঘটনার তীব্র শব্দে ছুটে আসেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা নিজেরাই উদ্ধারে নামেন। পরে পুলিশ পৌঁছে গিয়ে উদ্ধারকাজে সহায়তা করে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তিনজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আহত তিনজনের প্রাথমিক চিকিৎসা হয়েছে এবং তাঁদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, নিম্নচাপ ও মৌসুমী অক্ষরেখার প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরে পুরুলিয়াসহ গোটা দক্ষিণবঙ্গেই চলছে টানা বৃষ্টি। যার ফলে শালবনের মাঝে থাকা বহু মাটির ঘর, বিশেষ করে পুরুলিয়ার মতো উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় বাড়ি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা আরও বেড়েছে।
এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, প্রায় সব বাড়িই এখানে মাটির। বৃষ্টিতে দেওয়াল ভিজে গিয়ে যেকোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। ইতিমধ্যেই তামনা থানা এলাকায় মাটির ঘর ছেড়ে খোলা জায়গায় এসে থাকতে শুরু করেছেন অনেকে। এছাড়াও, একাধিক জায়গায় ধস, রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত, ব্রিজ ভেঙে পড়ার মতো ঘটনাও ঘটছে লাগাতার। মঙ্গলবারের মৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।