কলকাতা ও আশপাশের শহরগুলিতে লাগামছাড়া বেআইনি বিজ্ঞাপন ও হোর্ডিং নিয়ন্ত্রণে কড়া মনোভাব দেখাল কলকাতা হাইকোর্ট। একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে কলকাতা পুরসভা, নগরোন্নয়ন দফতর, মেট্রো রেল-সহ সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলিকে হলফনামা পেশের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত জানতে চেয়েছে, এতদিন আগের নির্দেশ কার্যকর করা সত্ত্বেও কেন বাস্তবে তা মানা হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: চিংড়িহাটায় মেট্রো জট কাটাতে উদ্যোগী কোর্ট, মঙ্গলবার সবপক্ষকে বৈঠকে বসার নির্দেশ
জানা যায়, বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণে ২০০৮ সালেই প্রথম নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। পরবর্তী সময়ে, ২০১৭ সালে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর শহরের বেশ কয়েকটি এলাকা গ্রিন জোন ঘোষণা করে। সেইসব এলাকায় বিজ্ঞাপন বা হোর্ডিং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। মামলা সূত্রে আরও অভিযোগ, দু’বছর আগে মেট্রোর প্রিন্সিপাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন মেট্রোর কোনও পরিকাঠামো বিজ্ঞাপনের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু আজও দেখা যাচ্ছে, মেট্রোর স্তম্ভ থেকে অন্যান্য অবকাঠামোতে নির্বিচারে লাগানো হচ্ছে বেআইনি বিজ্ঞাপন। শহরের নিরাপত্তা ও সৌন্দর্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেই আদালতে মামলা দায়ের করেন বিধাননগরের তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।
তিনি জানান, লাগামছাড়া এই বিজ্ঞাপন শুধু শহরের সৌন্দর্যই নষ্ট করছে না, বরং জনসুরক্ষার জন্যও বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে কলকাতা পুরসভা বেআইনি বিজ্ঞাপন শনাক্ত করতে কিউআর কোড সিস্টেম চালু করলেও সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি। গত বছর অক্টোবরে ক্যাপ্টেন ভেড়িতে হোর্ডিং ভেঙে পড়ার ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল। এ বছরের ৭ মার্চ জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালে একটি জয়েন্ট কমিটি এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্টও জমা দিয়েছে। শহরে দিন দিন যেভাবে বেআইনি হোর্ডিংয়ের দাপট বাড়ছে, তাতে উদ্বেগ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যেও। হলফনামা পাওয়ার পরেই এবিষয়ে পরবর্তী নির্দেশ দিতে পারে আদালত।